অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির প্রতিবাদে সব জেলা সদরে বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ অফিসের সামনে অবস্থান নেন এবং বিদ্যুৎ অফিসে স্মারকলিপিও দেন বিএনপি নেতারা।

সিলেটে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের নবাব রোডে বিদ্যুৎ ভবনের সামনে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদলসহ নেতাকর্মীরা। পরে বিএনপির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিউবো’র প্রধান প্রকৌশলীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে।

মুন্সিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি শেষে-স্মারকলিপি প্রদান করেছে। ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে দলটির পক্ষ থেকে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সদর উপজেলার সিপাহীপাড়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় এতে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র একেএম ইরাদত মানু, শহর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহবুব-উল-আলম স্বপন, সদস্য সচিব মনির হোসেন,জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি তারিক কাশেম খান মুকুল, সুলতান আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইদ্রিস মিয়াজী মোহন, জেলা মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী পাপিয়া রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান শ্যামল,মোজাম্মেল মুন্নাসহ আরও অনেকে।

জামালপুরের বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছে জেলা বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল ১১টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিচে থেকে মিছিল নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের উদ্দেশে রওনা হলে পুরাতন ওয়াপদা রোডে বাধা দেয় পুলিশ। পরে সেখানে অবস্থান নেয়ার পর বিএনপির ৫ সদস্যের একটি দল জামালপুর বিদ্যুৎ ভবনে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুনের নেতৃত্বে কর্মসূচীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

জয়পুরহাটে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিএনপির বিবাদমান দুটি গ্রুপ পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে অবস্থান কর্মসূচী ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বেলা ১১টায় জয়পুরহাট শহরের হাতিল খঞ্জনপুর এলাকায় নেসকো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মচারী পালন করেছে।

বিএনপির গোলজার হোসেন ও ফয়সল আলিমের নেতৃত্বে বিবামান দুটি গ্রুপ পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নেসকো অফিসের সামনে হাজির হয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। অবস্থান কর্মসূচী শেষে তারা নেসকো অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট করেছে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের রেজিস্ট্রিপাড়ায় সিলমি কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ অবস্থান ধর্মঘটের আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারন সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল প্রমুখ।

বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে জেলার নেসকোর কর্যালয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ খাতে সরবারহ নিশ্চিতে স্মারকলিপি জমা দেন। নেসকো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মুন্নাফ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

এর আগে পুলিশি বাধায় বিদুৎ অফিসের সামনের অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধার মুখে পিছু হটে ও শহীদ খোকন পার্কের সামনে গিয়ে শহরের সাতমাথা-জলেশ্বরীতলা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, বিদুৎ অফিস সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। কোন সংগঠনেরই তার সামনে সমাবেশ করার অধিকার নেই। পুলিশ বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেয়নি বরং শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করেছে।

পাবনা শহরের গোপালপুরের পাওয়ার হাউজ পাড়ায় বিদ্যুৎ অফিসের দিকে রওনা দিলে জেলার বড় ব্রিজের মাথায় পুলিশ বাধা দেয়, এ সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা শান্ত হয়। পরে বড় ব্রিজের পাশে ঘোড়া স্ট্যান্ডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফেরার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা শহরের বড় ব্রিজের পাশে লতিফ টাওয়ার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘আমরা শান্তি মিছিল করেছি, কারও ওপর হামলা চালাইনি।’

ফরিদপুরে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিও পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়েছে। তবে শহরের কাঠপট্টি তিন রাস্তার মোড় এলাকায় পুলিশ বিএনপির মিছিলে বাধা দেয়। পরে সেখানে তারা অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদরেস আলী ইছা ও সদস্যসচিব একে কিবরিয়া স্বপন। পরে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিতে অবস্থিত বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেয় জেলা বিএনপির ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বার্তাবাজার/এম আই