বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে যে সহিংসতা হয়েছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
মুখপাত্র আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যে হামলা চালানো হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। একশর বেশি নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন। বাংলাদেশে থাকা আমাদের সহকর্মীরা জাতিসংঘ লোগোসংবলিত গাড়ি ব্যবহৃত হওয়ার প্রতিবেদন দেখেছেন। এ বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। পরিস্থিতি উত্তরণে জবাবদিহি ও সংলাপ জরুরি।
এদিকে, গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনেও কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন স্থান পায়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে মার্কিন মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা আবারও শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সব সহিংসতার নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়টি আবারও উল্লেখ করছি।
তিনি বলেন, এ ছাড়া দেশজুড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যাহত হওয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানাই। যার কারণে বাংলাদেশি ও মার্কিন নাগরিকদের সংকটের তথ্য পাওয়ার সুযোগ কমে গেছে। এ ছাড়া দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশের নিন্দা এবং এ আদেশ বাতিল করার আহ্বান জানাই। এ ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন মুখপাত্র।
যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের ভরসা করে? অনেক আগে থেকেই তো তাদের বহু আহ্বান করে এসেছেন। এবার আপনারা কী আহ্বান রাখবেন? উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে থাকে। তবে কোনো বিষয়ে যখন আমাদের কোনো উদ্বেগ থাকে, আমরা তা তুলে ধরি।
কোটা সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন করলে মুখপাত্র বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে আমাদের কথা বলতে হবে সহিংসতার বিপক্ষে, ইন্টারনেট বন্ধ করা নিয়ে এবং অন্যান্য বিষয়, যা মানুষের মৌলিক মানবাধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের মানুষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী আশা করতে পারে? উত্তরে ম্যাথু মিলার বলেন, আমরা আমাদের উদ্বেগগুলো পরিষ্কার করে তুলে ধরব। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করব। আর বিকল্প নেতৃত্বের যে বিষয়টি আপনি তুলে ধরেছেন, সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ; যুক্তরাষ্ট্র নয়।