কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বোরোবি) অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের। আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বুধবার আসিফ নজরুল বলেন, আবু সাঈদকে যেখাবে হত্যা করা হয়েছে এটা একটা ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড। এটা একটা খুন। এটা মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।
তিনি বলেন, আমি শুধু ওই পুলিশ সদস্যের শাস্তি চাই না। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। উনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর) যদি লজ্জা থাকে, উনার মধ্যে বিন্দুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যদি থাকে তাহলে উনার পদত্যাগ করা উচিত। উনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই মুক্তিযুদ্ধে চেতনা কী এই ছিল? যারা বৈষম্যহীনতার আন্দোলন করবে, যারা ইক্যুয়ালিটির আন্দোলন করবে তাদেরকে আনপ্রোভকড অবস্থা পুলিশ গুলি করে মারবে?
ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ছাত্রলীগের হাত ধরে দেশ স্বাধীন হয়েছে সেই ছাত্রলীগকে খুনি বাহিনী কারা বানিয়েছে? যারা বানিয়েছে তাদের বিচার চাই।
আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা (প্রশাসন) যারা আক্রান্ত তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেন। যারা আক্রমণ করে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেন না? এটা কী ধরনের দেশ! এ রকম একটা ঘটনার পর ওই পুলিশকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না?
পুলিশের আইন সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, আপনি ততটুকু শক্তি প্রয়োগ করতে পারবেন যতটুকু আপনার প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজন। আবু সাঈদ কাউকে মারতে যায়নি। তার হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল না, সে শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে ছিল। এই অবস্থায় তাকে যেভাবে গুলি করে মারা হয়েছে এটা একটা বর্বরোচিত ঘটনা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বেরোবি ক্যাম্পাসের সামনে পার্ক মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় সংঘর্ষের সম্মুখে থাকা আবু সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। তিনি বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।