জাল দলিল বানিয়ে জায়গা জমি আত্মসাৎ এবং বাড়ি থেকে বের হবার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদ করায় শশুর-শাশুড়ি এবং শ্যালিকাকে (বউয়ের বোন) মারপিটের অভিযোগ উঠেছে ফরিদুল ইসলাম ফটিক নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গত শনিবার রাতে উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের রাণীগঞ্জে এই ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় রাতেই তারা ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। মারপিটকারী জামাতা ফরিদুল ইসলাম ফটিক ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা যায়, রাণীগঞ্জ গ্রামের হযরত আলী মন্ডলের বড় মেয়ের সাথে ২০১১ সালে বিয়ে হয় অভিযুক্ত ফরিদুল ইসলাম ফটিকের। সেই থেকে শশুরের জায়গায় উপরেই বাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছে। বিয়ের পর কৌশলে জাল দলিল তৈরি করে শশুরের সম্পদ দখল করে ফটিক। শশুরের যাতায়াতের পথও বন্ধ করে দেয় অভিযুক্ত এই স্কুল শিক্ষক। গত শনিবার এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে শ্যালিকাকে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেয় এবং শশুর- শাশুড়িকে মারপিট করে।
আহত অবস্থায় শশুর হযরত আলী মন্ডল বলেন, আমার সব কিছু দখল করেছে আমার বড় মেয়ের জামাতা। ছোট মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে আজ আমি অসহায়। শনিবার আমাকে সহ আমার স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে বেদম মারপিট করে এই জামাই। একাধিকবার বিচার শালিস হয়েছে। কিন্তু আমার কুলাঙ্গার জামাই বিচারকদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারপিট করতে চড়াও হয়।
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মনিরুজ্জামান মুরাদ বলেন, দুই নারী সহ এক বৃদ্ধ আমাদের হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের শরীরে গুরুতর কোন জখম নেই। তবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা থাকায় তারা চলাচল করতে পারছে না।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত জামাই ফরিদুল ইসলাম ফটিক। তিনি বলেন, ‘আমার শশুর আমার স্ত্রী এবং শ্যালিকাকে জমি লিখে দিয়েছে। আমার স্ত্রীর জমির উপর আমি বাড়ি তৈরি করেছি। এখন সেই জমি দ্বিতীয় স্ত্রীকে দেওয়ার জন্য আমার কাছে ফেরত চাইছে আমার শশুর। আমি তাদেরকে মারপিট করিনি। বরং তারাই আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারপিট করেছে।’
এদিকে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, ‘মঙ্গলবার একটি অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু পারিবারিক সমস্যা, তাই আজ বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করার চেষ্টা করা হবে। সমাধান না হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বার্তা বাজার/জে আই