চলমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার অন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দুই দফায় হামলা চালিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় কটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন পুলিশ সদস্য সহ অর্ধ ডজন শিক্ষার্থী।

সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ও কাটাপাহাড় সড়কে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এর আগে দুপুর আড়াইটা দিকে শহরগামী শাটল থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের চবি সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে বেদরক পিটিয়ে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবী, দুপুরে আমরা ষোলশহর গিয়ে আন্দোলনে যোগ দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে জড়ো হই। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা এসে শাটলের চাবি নিয়ে নেয় ও আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা তালাত মাহমুদ রাফিসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জিম্মি করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। তখন আন্দোলনকারী রাফিকে উদ্ধার করতে যাওয়ার পথে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম আরাফাত, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরাফাত রায়হান ও আইন বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খালেদ মাসুদের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আমাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহবুবুর রহমান।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দাবি, তালাত মাহমুদ রাফি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এরপরও সে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাই তার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নেই।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাতে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে সমবেত হন। এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার, রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।

সাধারন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রবিবার রাত ১১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মাঝরাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ক্যাম্পাসের কাটাপাহাড় রোডে পেছন থেকে অতর্কিত ককটেল হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে দুজন আহত হয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর প্রকাশ হলে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এসময় সুমন নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সুমন চবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের সেশনের শিক্ষার্থী।

এই ঘটনায় কোটা অন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিকেলে ষোলশহর স্টেশনে বিক্ষোভ করে। এতে ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা চালায়। এঘটনায় এক পুলিশ সদস্য সহ আহত হয়েছে বেশ কজন শিক্ষার্থী।

চবি প্রক্টর অহিদুল আলম বলেন, আন্দোলনকারীরা যদি আদালতের রায় না মানে, তাহলে তাদের বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা আদালতে বাইরে যেতে পারবো না। আর আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।