মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বারহাদ বলেছে যে চারজন ওরাং আসলি আদিবাসী দেশটির শত শত বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ৪জন কেবিন ক্রু সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে। এই বছর তারা সফলতার সাথে স্নাতক শেষ করে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। ওরাং আসলী আদিবাসীদের বসবাস মালয়েশিয়ার গহীন অরন্যে। আধুনিক মালয়েশিয়ানদের থেকে তাদের ধর্ম, বর্ন, সংস্কৃতি সম্পূর্ণ আলদা। আজ থেকে শত শত বছর আগে এই মালয় উপদ্বীপে ওরাং আসলী ছাড়া আধুনিক জগতের কোন মানুষের বসবাস ছিল না। দেশটিতে ওরাং আসলী প্রথম বাসিন্দা।
শুক্রবার(১২ জুলাই) স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বিবৃতিতে বলা হয়, এই ওরাং আসলী ৪ তরুনী তাদের নিজ সম্প্রদায়ের নাম পরিবর্তন করে আধুনিক নাম রাখা হয়। আগের নাম সুকু জাকুন থেকে আমিশা নুরশাহিরা রোসমান। সুকু তেমুয়ান থেকে সারাহ এলিসা তাং আমান। সুকু সেমাই থেকে বীনা অ্যাঞ্জেলিনা জিনসিস। এবং সুকু সেমাই-এর আলজারিজা আলভি। ৫৬ জন কেবিন ক্রুদের মধ্যে তারা সম্প্রতি তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করে ৭ মে থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলইন্সের ফ্লাইটে পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন।
গতকালের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওরাং আসলি ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের (জাকোয়া) মহাপরিচালক দাতুক সাপিয়াহ মোহাম্মদ নর।
তিনি বলেন, ওরাং আসলি সম্প্রদায়ের কেবিন ক্রু প্রথম দলকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স পরিবারে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। এই অর্জন আমাদের কর্মশক্তির মধ্যে বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধির জন্য আমাদের চলমান প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়, তাদের পটভূমি নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে।
“আমাদের কঠোর প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্যারান্টি দেয় যে সমস্ত কেবিন ক্রু সদস্যরা পরিষেবার শ্রেষ্ঠত্ব এবং মালয়েশিয়ান আতিথেয়তার সর্বোচ্চ মান পাবেন, ব্যক্তিগতকৃত এবং প্রিমিয়াম পরিষেবাগুলি প্রদান করে যা আমাদের সাথে তাদের ভ্রমণের সময় আমাদের যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়৷ আমরা আমাদের বিশ্বব্যাপী যাত্রীদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার জন্য নিবেদিত রয়েছি, যাতে তারা আমাদের কর্মশক্তিকে সংজ্ঞায়িত করে এমন বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি, উষ্ণতা এবং আতিথেয়তার মাধ্যমে তারা বাড়িতে অনুভব করে, “এমএজি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাতুক ক্যাপ্টেন ইজহাম ইসমাইল গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, জাকোয়ার সহযোগিতায় জাকুন, তেমুয়ান এবং সেমাইয়ের মতো ওরাং আসলী জঙ্গলের আদিবাসীর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে পাহাং, পেরাক এবং জোহর প্রদেশে নিয়োগের প্রচেষ্টা শুরু করে।
এই ওরাং আসলী আদিবাসীদের জীবনধারা এ্যামাজনে বসবাসরত আদিবাসীদের মতই বৈচিত্র্যময়। বর্তমানে মালয়েশিয়ার গহীন অরন্যে লক্ষাধিক ওরাং আসলী রয়েছে যা অতীতে কয়েক লাখ ছিল। পোশাক হিসেবে গাছের ছাল ও শিকার করা প্রনাীর চামড়া ব্যবহার করে। জঙ্গলে পশু শিকার ও কৃষিকাজ করে তারা জীবন ধারন করে। তবে সভ্য জগৎ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন। ব্রিট্রিশ আমল থেকে শুরু করে দেশটির বর্তমান সরকার নানা পরিকল্পনা করে ওরাং আসী জাতি কে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে এবং সফলও হয়েছে।