দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি থেকে ডুগডুগিহাট হয়ে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক নিয়ে ভোগান্তি কয়েক যুগের। সেই ভোগান্তি লাঘব করতে হিলি থেকে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ সহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সরু ও জরাজীর্ণ কালভার্ট পুনঃনির্মান এবং বাজার অংশে রিজিড পেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মান প্রকল্পের অনুমাদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)।

৪৬৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দে ৩টি পৃথক প্যাকেজে এই জাতীয় মহাসড়ক উন্নীত হবে। তবে প্রকল্প শুরুর দুই বছর অতিবাহিত হলেও কাজের অগ্রগতি রুপ নিয়েছে চরম ভোগান্তিতে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আছে আর মাত্র ৫ মাস। চলতে বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্পের মেয়াদ। মেয়াদ শেষের পথে হলেও রাস্তা খুঁড়ে প্রশস্তের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যত্রতত্র খুঁড়ে রাখায় একেবারে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে উঠেছে এই জাতীয় সড়ক। চলতি বর্ষা মৌসুমে কাঁদা পানিতে ভরে আছে পুরো সড়ক। বর্ষা শুরুর আগে তীব্র ঘূলায় অন্ধকার হয়ে থাকত পুরো সড়ক। এতে একেবারেই চলাচলের অনুপোযুক্ত হয়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি।

সড়ক বিভাগের তথ্য বলছে, প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লিঃ এবং অপর আরেকটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করবে আরেক প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক। প্রকল্প শুরু হয়েছে ০১ জুলাই ২০২২ এবং প্রকল্প শেষ হবার কথা চলতি ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সে অনুযায়ী আর বাকি মাত্র কয়েকমাস। এখন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও, তিনটি প্যাকেজের কাজের গড় অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ বলে জানায় সওজ কতৃপক্ষ।

একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর সড়কটির কাজ শুরু হবার পর স্বস্থি ফেরে কয়েকলাখ মানুষের। বৃহত্তর স্থলবন্দর হিলি থেকে পণ্য আমদানি-রফতানি করার অন্যতম দুটি রুটের একটি এই জাতীয় মহাসড়ক। হিলি থেকে ঘোড়াঘাটের উপর দিয়ে সহজেই যাতায়াত করা যায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের যেকোন প্রান্তে। রাস্তাটির প্রশ^স্থকরণ কাজ শেষ হলে হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রফতানিরকারক ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত ও পণ্য আনা নেয়া কাজ আরো সহজ হবে। অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে পরিবহণ ব্যয়। তবে সেই স্বপ্ন সহসাই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কাজের ধীরগতির কারণে সড়কটির উন্নয়ন কাজ বিশাদে রুপ নিয়েছে স্থানীয় ও ব্যবসায়ী সহ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করা মানুষের মাঝে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে আমরা ঠিকমত কাজ করতে পারছিনা। বৃষ্টির কারণে কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। তার মাঝেই যতটুকু সম্ভব আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে আগামী আগষ্ট মাস থেকে আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করবো। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুর আজিজ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছি। যদি তারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারে তবে তারা সময় বৃদ্ধির আবেদন করবে। তবে অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আমরা এই জাতীয় মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীত করার কথা ভাবছি।