রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় টেন্ডার ছাড়াই গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে একটি নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল প্রধান ও সহকারী শিক্ষক এর বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মিয়ারহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গাছের গোলাই ভর্তি একটি ভ্যান আটক করে দেয় স্থানীয়রা। এসময় বিদ‍্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য রুহুল আমিন গাছ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিদ‍্যালয়ের মাঠে উত্তেজনা দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানায়, কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়া ও সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম বেআইনিভাবে গোপনে গাছ কেটে নেয়ার সংবাদ পেয়ে গাছের গোলাই ভর্তি ভ্যান আটক করি। আটক করার পর গাছ ক্রয়কারী ব্যবসায়ীর মাধ্যমে জানতে পারি এই গাছ প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়া ও সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান বিক্রি করেছে। এই গাছ গোপনে চুরি করে বিক্রি করে নিজের পকেট ভর্তি করেছে প্রধান শিক্ষক। আমরা প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

গাছের গোলাই আটককারি সোহানুর রহমান জানান, আমি এই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন থেকেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়টি নিজের খেয়াল খুশিমত পরিচালনা করছে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়া। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদিনকে সুকৌশলে সাসপেন্ড করে নিজেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়ে কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে ২২ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই হাতিয়ে নিয়েছেন বাদল মিয়া।এছাড়াও ২০১৬ সাল থেকে অদ্যাবধি নিয়ম বহির্ভূতভাবে একটানা এডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পরিচালনার মাধ্যমে অনিয়মের রাজত্ব কায়েম করেছে। টেন্ডার ছাড়া নিজের খেয়াল খুশিমত স্কুলের গাছ বিক্রিই প্রমাণ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়া কোন নিয়মের পরোয়া করে না।

মিয়ারহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়া জানান, বৃষ্টিতে গাছটি পড়ে গিয়েছিলো। শিক্ষক অফিস রুমের ফ্যানটি নষ্ট হয়েছিলো। গাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ফ্যান ক্রয় করেছি। আমি এককভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। স্কুল কমিটির সভাপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

স্কুল কমিটির সভাপতি শাহজাদা সরকার সোহাগ জানান, আমি ঢাকায় আছি।গাছটি বৃষ্টিতে পড়ে গিয়েছিলো। একটি ফ্যান নষ্ট থাকায় গাছটি বিক্রি করে নতুন ফ্যান কেনা হয়েছে। এই টাকা কেউ খায়নি। স্কুলের উন্নয়নের জন্যই আমি গাছ বিক্রির অনুমতি দিয়েছি।

মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মমিন মন্ডল জানান, একটু আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি যেখানের গাছ সেখানেই রাখতে। টেন্ডার ছাড়া স্কুল মাঠের গাছ বিক্রির কোন সুযোগ নেই। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ ব্যাপারে কথা বলতে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।