নাটোরের গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে বৈদ্যুতিক বাণিজ্যিক মিটার করেছে দুবৃর্ত্তরা। এসময় তারা যোগাযোগের জন্য চিরকুটে লিখে রেখে তাদের একটি মোবাইল নম্বর। ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে বিকাশে অথবা নগদে মিটার প্রতি চাওয়া হয় টাকা। চিরকুট লেখা নম্বরটি সাংবাদিকদেরকে জানালে ও থানায় এবিষয়ে অভিযোগ দিলে ফেরত দেওয়া হবে না তাদের মিটার। নতুন মিটার লাগালে পরবর্তীতে সেটা পুড়িয়ে দেওয়া হবে এমন মর্মে এহুমকিও প্রদান করা হয়।
স্থানীয় তথ্যমতে, গত ৫জুলাই শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলা পৌরসদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড়সহ বেশ কয়েকটি মহল্লায় প্রায় ৩৬টি বৈদুতিক মিটার চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে একরাতে অনেকগুলো মিটার চুরির ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক নিরাজ করছে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পৌরসদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড় এলাকার চালকল মালিক ব্যবসায়ীর ১৩টি মিটার চুরি হওয়ার দৃশ্য। চুরি হওয়া মিটারের রেখে যাওয়া পলিথিন পেপারে মুড়ানো একটি চিরকুট।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী চালকল মালিক মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, মিটার চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে তার এলাকায়। তবে তার মিটার এই প্রথম চুরি হয়েছে। শুক্রবার সকালে চাতালে এসে দেখেন মিটার নেই। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মুড়িয়ে থাকা একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটের ভেতরে একটি কাগজে লেখা ছিলো, একটি মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায় নম্বর।
এ চুরির বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পর তিনি জানতে পারেন তাঁর শুধু একার নয়, আশপাশ এলাকা দিয়ে প্রায় ৩৬টি মিটার চুরি হয়েছে রাতে। এঘটনায় পল্লী বিদ্যুত অফিসে খবর দিলে তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভুক্তভোগী চালকল মালিক মো.রবিউল করিম জানান, মিটার চুরির ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন যাবৎ চাতাল ব্যবসায়ী, মিল কারখানা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মিটার চুরি করে বিকাশে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে মিটার ফেরত দেয়। তার মিটারটি এর আগেও একবার চুরি হয়েছিলো। মিটারের নিচে রেখে যাওয়া নম্বরে কল দিলে বিকাশ নম্বর দেয়। সেই নম্বরে পূর্বের ঘটনায় ৪ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। তারপর চোরের দেওয়া তথ্য মতে নদীর তীরবর্তী স্থান থেকে মিটার সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। প্রশাসনিক ভাবেও এর কোন প্রতিকার না পেয়ে জিম্মি হয়ে টাকা দিয়ে মিটার ফেরৎ নিতে হয়।
এ বিষয়ে নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ (গুরুদাসপুর জোনাল অফিস) এর ডিজিএম মোঃ মোমিনুর রহমান বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার তাদের তথ্য অনুযায়ী গোপালের মোড় থেকে ১৩টি মিটার চুরি হয়েছে। তবে এর বেশি চুরি হয়েছে কিনা এটা এখনও নিশ্চিত হতে পারে নাই।ক্ষতিগ্রস্থ্য সকল গ্রাহককে থানা পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ উজ্জল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অপরাধীদের দ্রæত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।