পটুয়াখালী-কুয়াকাটা পর্যটক ও স্থানীয়দের চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আজ রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করেন। এতে পর্যটক সহ জনসাধারণের চলাচলের জন্য কিছুটা সুবিধা তৈরী হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার থেকে আলীপুর শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে ভড়া। সামান্য বৃষ্টিতেই পাখিমারা বাজারের মূল কেন্দ্রসহ মৎস্য বন্দর আলিপুর থ্রি পয়েন্টে বড় বড় গর্তে কয়েকফুট পানি জমে থাকে।

এতে করে কুয়াকাটাগামী পর্যটকসহ সকল জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। স্বাভাবিক চলাচলসহ যেকোনো যান চলাচলের কোনো পরিবেশই নেই। সবচেয়ে মারাত্বক দূর্ভোগ পোহাতে হয় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজার এবং আলিপুর থ্রি পয়েন্ট এলাকায়। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি স্থানীয় সাংসদের নজরে এলে সড়কটি সাময়িক সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হয়। পাখিমারা বাজার এবং আলীপুর বাজারের থ্রি পয়েন্টে বড় বড় গর্তের ঝুকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোয় ইট দিয়ে সাময়িক যাতায়াতের উপযোগী করার জন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

এতে পর্যটক ও এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কিছুটা লাগব হবে বলে জানান স্থানীয়রা। সংবাদ প্রকাশের দুই দিন পরই স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিববুর রহমান মহিব’র নির্দেশনায় সড়কটি সাময়িক সংস্কারের কাজ শুরু করেন কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন। সড়কের সাময়িক সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় সড়কে চলাচলকারী যানবাহন চালক, স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও দ্রুত স্থায়ী সংস্কারের দাবী জানানো হয়।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, পাখিমারা বাজার সহ মহিপুর শেখ রাসেল সেতুর আলীপুর থ্রি পয়েন্টের বেশ কিছু বড় বড় গর্তে পর্যটকমুখি ব্যস্ত সড়কে চলাচলের ভোগান্তি আমাদের নজড়ে আসে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে মাননীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশোনায় উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবাধায়নে সড়কের সাময়িক সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০০৯-২০১৪ অর্থ বছরে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার থেকে মহিপুর মৎস্য বন্দরের শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত ১১ কি. মি. অংশের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে খুলনার দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তখন এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ২০ কোটি টাকা। কাজটি মানসম্মত না হওয়ায় তখন ঠিকাদারের বিল আটকে দেয় পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুটি দল সরেজমিন তদন্তও করেন। তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকেও কাজের গুনগত মান ভালো হয়নি বলে প্রতিবেদন দেয়া হয়। নিম্নমানের কাজের কারণে তখন সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮ কোটি টাকার বিল আটকে দেয়। তবে এ কাজ বাবদ ১২ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম চুড়ান্ত বিল দাবি করে ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন।

আদালত মামলার কারণে ১১ কি. মি. সড়কের ওপর সংস্কার কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। যার ফলে গত দশ বছর ধরে সংস্কার বিহীন অবস্থায় পড়ে থাকে পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত এ অংশের সড়কটি। তবে কুয়কাটা পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার কারণে সওজ কর্তৃপক্ষ এ অংশে জরুরী মেরামতের কাজ করে সচল রাখে সড়কটি।