নিজের ও স্বজনদের নামে তিন মাসে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (ট্যাক্সেস লিগ্যাল অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) কর্মকর্তা কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল। এমনটি জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এর আগে গত ২৭ জুন ফয়সালের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। প্রাথমিক তদন্ত শেষে গত বৃহস্পতিবার আদালতে দুদকের দাখিল করা নথি থেকে জানা যায়, আয়কর কর্মকর্তাদের বদলি, করদাতাদের ভয়ভীতি দেখানো এবং অন্যান্য অনিয়মের মাধ্যমে ফয়সাল প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

মতিউরকে রক্ষায় মরিয়া প্রশ্রয়দাতা প্রভাবশালীরামতিউরকে রক্ষায় মরিয়া প্রশ্রয়দাতা প্রভাবশালীরা
ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠার পর গত বছর ফয়সালের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ফয়সাল, তার স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনের নামে ৮৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফয়সাল ও তার পরিবার যাতে ওই সম্পত্তি অন্য কোথাও হস্তান্তর করতে না পারে এবং ওই টাকা যাতে পাচার না হয়, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এসব নথির মধ্যে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফয়সাল তার ও তার পরিবারের নামে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১২ নভেম্বর ২০২০ থেকে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র কেনা হয়েছে।

এছাড়াও দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সালের শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে প্রায় ১৯ কোটি টাকা জমা ও পরে এর বড় একটি অংশ উত্তোলনের তথ্য পেয়েছে দুদক। দুদকের নথিতে ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন, ফয়সালের ভাই খালিদ হাসান, শ্বশুর আহম্মেদ আলী, শাশুড়ি মমতাজ বেগম, শ্যালক আফতাব আলী, খালাশাশুড়ি মাহমুদা হাসান, মামাশ্বশুর শেখ নাসির উদ্দিন, আত্মীয় খন্দকার হাফিজুর রহমান, রওশন আরা খাতুন ও ফারহানা আফরোজের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আবু মাহমুদ ফয়সালের পৈতৃক বাড়ি খুলনা নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুজগুন্নী কাজীপাড়া এলাকায়। এখন থাকেন রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ফ্ল্যাটে। খুলনাতেও তাদের একাধিক বাড়ি, প্লট, দোকান ও জমিজমা আছে।