অদম্য ইচ্ছের কাছে দারিদ্র্যতা যে কখনো বাঁধা হয়ে দঁড়াতে পারে না তার বাস্তব প্রমাণ দেখিয়ে দিলেন আখাউড়ার মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা আক্তার। এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় সবথেকে বেশি নম্বর পেয়ে এ প্লাস পায় সে। ভর্তির সুযোগ পায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। কিন্তু আর্থিক সংকট তাকে এখানেই থামার সংকেত দেয়। চিকিৎসক হতে চাওয়া মেয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নৈশপ্রহী বাবা দিশেহারা হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় তিনি মেয়েকে নিয়ে পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফার কাছে পরামর্শ নিতে গেলে মেয়র তাদের মন্ত্রীর শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। বৃহস্পতিবার রাতে কারিমা এবং তার বাবা মন্ত্রীর ঢাকার বাসায় সহযোগিতার জন্য গেলে মন্ত্রী তার পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এবং কারিমাকে শুধুই পড়াশোনাই মনোযোগ দিতে বলেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ইমরান জানান, কারিমা আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের মসজিদপাড়া এলাকার নৈশপ্রহরী মোহাম্মদ কবির হোসেনের মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে কারিমা সবার বড়। আখাউড়া নাছরিন নবী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পড়া লেখার প্রতি অধির আগ্রহ থাকায় দারিদ্রতা তাকে ধামিয়ে রাখতে পারেনি।
মেধাবী কারিমা আক্তারের পড়া-লেখার দায়িত্ব আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল। তিনি আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে মেয়র জানান, কারিমা আখাউড়া নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উপজেলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এ বছর এসএসসি পাশ করেছে। মোট ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২২৮ নম্বর পেয়েছে কারিমা আক্তার। সে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে সুবিধাবঞ্চি হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে পরিবারটি।

ঢাকায় পড়াশোনা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
ঢাকায় গিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে পিতা ও কন্যা দেখা করেন। আইনমন্ত্রী তাদের কথা শুনে মেধাবী কারিমা আক্তারকে উচ্চস্তর পযর্ন্ত পড়াশোনা করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে আইনমন্ত্রী কারিমা আক্তারের পুরো পড়া-লেখার সার্বিক দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন।

আইনমন্ত্রী মেধাবী কারিমাকে পড়া-লেখায় ভালো ফলাফল করায় দোয়া ও আর্শিবাদ করেন। পড়াশোনা করে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করারও আহবান জানান।

অদম্য মেধাবী কারিমা আক্তার জানায়, আমি চিকিৎসক হয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের মতন মানুষের সেবা করতে চাই। মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কয়েক মিনিটের সাক্ষাৎ আমাকে অনেক বড় স্বপ্ন পূরনের পথে এগিয়ে নিয়েছে। আমি আমৃত্যু তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।

এদিকে মেয়ের ভালো ফলাফলে খুশি হলেও উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন বাবা মোহাম্মদ কবির হোসেন। তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্নই দেখি তবে সাধ আর সাধ্যের মধ্যে দারিদ্রতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার উচ্চ শিক্ষাসহ লেখা পড়া চালিয়ে নিতে পারবো কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। আমাদের আইনমন্ত্রী মহোদয় আমার মেয়ের পড়াশোনা দায়িত্ব নেওয়ার আমি এখন স্বপ্ন দেখছি আমার মেয়ে চিকিৎসক হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে।