দেশবিরোধী চুক্তি আড়াল করতেই ছাগলকাণ্ড, বেনজিরকাণ্ড, আজিজকাণ্ড, হেলিকপ্টারে আসামি গ্রেপ্তারকাণ্ড সামনে আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, একজন ডিক্টেটরের হুকুমে দেশ চলছে বলেই জনগণ আজ ত্যাজ্য, প্রত্যাখ্যাত ও নিজ দেশে পরবাসী হতে চলেছে। সরকার নামক ভাইপারের ছোবলে গোটা জাতি এখন ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে। শ্বাসবায়ু প্রাণ ভরে কেউ গ্রহণ করতে পারছে না। তবে জনগণ চূড়ান্ত বাধা টপকিয়ে বাংলাদেশকে কারো আশ্রিত রাজ্য বানাতে দেবে না। আজ শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যারা ভারত বিরোধীতার ইস্যু খুঁজছেন, তারা আবারও ভুল পথে যাচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরের কথায় ধরে নিতে হবে আমাদের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে কেউ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে স্থাপনা করে যাবে তারপরও এর বিরোধিতা করলে সেটি ভুল পথ হবে। এ ধরনের কথা কেবলমাত্র নতজানু, জনগণের ক্ষমতা ছিন্তাইকারী দেশদ্রোহীদের মুখেই সাজে।

তিনি বলেন, জনগণের সম্মতি ব্যতিরেকে চিকেন নেককে বাইপাস করে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারত রেলপথ নির্মাণ করবে আর সেটি চুপ করে দেখা ৭১’র শহীদদের রক্তকে অসম্মান করার শামিল। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেলপথ বসানোর চুক্তি করে শেখ হাসিনা স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের নির্যাতনের সাথে বেইমানি করছেন। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্তে ভেজা, ভারত থেকে বয়ে আসা বাংলাদেশের নদীগুলো উষর মরুভূমিতে পরিণত হওয়া, চরম বাণিজ্য ঘাটতির পটভূমিতে বাংলাদেশের বুক চিরে রেললাইন বসিয়ে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের সুযোগে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যে শনিরদশা ডেকে আনা হবে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিজস্ব শক্তির ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারবে না। এমনিতেই আমাদের দেশের জনগণের এনআইডির সকল তথ্য ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারত সবসময় বিগব্রাদার সুলভ গরিমা থেকে বাংলাদেশকে বিবেচনা করে।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা ডামি নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিয়েছে ভারত, তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিনিময়ে ভারতকে সব উজাড় করে দিতে কুণ্ঠিত হচ্ছেন না। জনগণ মনে করে দেশে দুর্নীতির মহামারি, লুণ্ঠন আর কুৎসিত অনাচারের নানা রং-বেরঙের কাহিনি এখন মানুষের মুখে-মুখে। আর এই সমস্ত অপকর্মে জড়িতরা সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। এসব ঘটনা ফাঁস হওয়াতে সরকারের মন্ত্রী ও এমপিরা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। ভারসাম্যহীন কথাবার্তা বলছেন।

বিএনপির আগামীকালের সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতীক, ‘গণতন্ত্রের মা’ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক নিরবচ্ছিন্ন অঙ্গীকারাবদ্ধ নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে আগামীকাল শনিবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ২টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকাবাসীসহ দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া, তারিকুল আলম তেনজিং, মশিউর রহমান বিপ্লব, শামসুজ্জামান মেহেদী, ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা সেলিম রেজা, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম প্রমুখ।