ঘুষকাণ্ডে অবশেষে পরিদর্শক থেকে উপপরিদর্শক হচ্ছেন আবদুল কাইউম। তার এই পদাবনতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত মতামত নিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গত বছর আগস্টে সাইফুল ইসলাম সুমিত নামে এক ব্যক্তিকে এয়ারগানসহ আটকের পর সেটিকে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বাড্ডা থানার তৎকালীন ওসি কাইউম ছাড়াও তিনজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে। অন্য দু’জন হলেন- এসআই মেহেদী হাসান ও কনস্টেবল নজরুল। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তদের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনারের ‘শুনানি’ অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওসির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হলেও গুলশান বিভাগের তৎকালীন ডিসি (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. শহিদুল্লাহ ও ঢাকা উত্তর সিটির ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম তদন্তের বাইরে রয়েছেন। তারা বলেন, নিয়ম না মেনেই অস্ত্রটি বিক্রি করেছিলেন জাহাঙ্গীর।

এদিকে ওসি কাইউমের ভাষ্য অনুযায়ী, গুলশান বিভাগের তৎকালীন ডিসির কার্যালয়ে অভিযুক্ত সুমিতকে হাজির করা হয়েছিল। সুমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের মিল না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ওসি কাইউমের র্যা ঙ্ক অবনমনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ডিএমপির ডিসি (ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড) আলমগীর হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পদাবনতির জন্য পিএসসির মতামত চাওয়া হয়েছে। গত আগস্টে কাইউম বাড্ডা থানার ওসি থাকাকালে স্থানীয় পাখির গলি এলাকা থেকে কাজী পান্না নামে একজন ফেসবুকে পোস্ট দেন।

তিনি বলেন, অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদাবাজির হুমকি দিচ্ছেন সুমিত। এরপর ওসির নির্দেশে সুমিতকে আটক করে পুলিশের একটি টিম। সুমিত দাবি করেন, কাউন্সিলর জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে অস্ত্রটি কিনেছেন তিনি। তবে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, নিয়ম না মেনেই সেটি হাতবদল হয়েছে।

কাইউম তদন্ত কমিটির কাছে দাবি করেছেন, গত ২৩ আগস্ট সুমিতের খেলনা এয়ারগান ও সেটি কেনার রসিদ এবং অভিযানে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের ডিসির অফিসে হাজির করা হয়। সুমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কারও অভিযোগ না থাকায় ডিসির কার্যালয় থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

একাধিক সূত্র বলছে, টাকার বিনিময়ে এয়ারগানকে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে সুমিতকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় অন্তত ২২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। কাইউম বর্তমানে ডিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের মতিঝিল বিভাগে কর্মরত।

সূত্র: সমকাল