শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে শশুরবাড়িতে মধ্যরাতে স্ত্রীর গলায় ছুড়িকাঘাত করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি টের পেয়ে ছুড়িসহ স্বামী রায়হান মল্লিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাতে সাড়ে ৩ টার উপজেলার চরকুমারিয়া ইউনিয়নের ফয়েজ উল্লাহ মোল্লা কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে ফয়েজ উল্লাহ মোল্লা কান্দি গ্রামের ফরিদ মোল্লার মেয়ে তনিমা আক্তার তন্নির (২০) সঙ্গে বিয়ে হয় হয় ডি এম খালী ইউনিয়নের চরচান্দা গ্রামের মোতালেব মল্লিকের ছেলে রায়হান মল্লিকের। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌতুকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনমালিন্যসহ ঝগড়া চলছিল। এক পর্যায়ে গত তিন মাস আগে বাবার বাড়ি চলে আসে তনিমা। এরপর গত ঈদুল আজহার দুই দিন পরে স্বামী রায়হান মল্লিক তনিমার বাবার বাড়ি আসলে কয়েকদিন তাদের সম্পর্ক বেশ ভালো ভাবেই চলছিল।

বুধবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে হঠাৎ করে তাদের দুজনের মধ্যে ফের ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে রায়হান মল্লিক একটি ধারালো ছুরি দিয়ে তনিমা আক্তারের গলায় আঘাত করেন। এতে তনিমা জখম হয়ে চিৎকার করলে রায়হান তাকে বালিশ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তনিমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান। অন্যদিকে স্থানীয়রা স্বামী রায়হান মল্লিককে বেঁধে রাখে। সকালে পুলিশ আসলে রায়হানকে পুলিশের কাছে তুলে দেয় স্থানীয়রা।

আহত তনিমার ভাই তানজিল আহমেদ মোল্লা বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বোনের ওপর নির্যাতন করছিল রায়হান। বিয়ের সময় দেওয়া স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে খেয়ে ফেলছে রায়হান। এরপর সে যৌতুকের দাবিতে আমার বোনের উপর নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে আমার বোন আমাদের বাড়িতে চলে আসে। পরে রায়হান আবার তনিমাকে নিতে এসে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার বোনকে হত্যার উদ্দেশ্যে সে আঘাত আঘাত করেছে, আমরা বিচার দাবি করছি।

এবিষয়ে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, জনতা রায়হানকে আটক করে রেখেছিল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত রায়হানকে ধারালো ছুড়াসহ আটক করেছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনিপ্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।