রাজধানীর উত্তর সিটির দক্ষিণখানের সড়ক প্রকল্পের কাজ কষাইবাড়ি থেকে দক্ষিণখান পর্যন্ত অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় মাসের পর মাস। গত ২০২৩ ইং সালে সড়কটি খোড়াখুড়ি শুরু হয়। এই সড়কের কারনে এলাবাসীর ব্যবসা-বানিজ্য বন্ধের পথে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ চলছে। সড়কটিতে বৃষ্টির পানি, বাথরুমের ময়লা পানি ও পোষাক কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি মিশে একাকার।

সড়কটিতে জমে থাকা পানির এই জলাবদ্ধতায় ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ আর মশা-মাছি জন্মাচ্ছে,সেই সাথে ছড়াচ্ছে রোগজীবাণু। দক্ষিণখান গাওয়াইর বাজার,হাছেন টাওয়ারের সামনে দেখা যায় রাস্তার মাঝে পিট করার পাশে পশু কোরবানি বর্জ্য ও ময়লা আবর্জনা পড়ে আছে দিনের পর দিন। দুর্গন্ধ আর মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে এলাকাবাসীর জনজীবন। নেই কোনো জবাবদিহিতা।

এলাকাবাসীর চলাচলে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। ঢাকা উত্তর সিটির দক্ষিণখান বাজারের সামনে থেকে ছবি তুলতে গেলে এবং এলাবাসীর বক্তব্য নিতে গেলে তারা গণমাধ্যমকে জানান,আপনারা যতই ছবি তোলেন আর যতই নিউজ করেন কোনো লাভ নেই। এর আগে অনেক টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় নিউজও হয়েছে কোনো লাভ হয়নি ।

এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,এ রাস্তার কাজ কোন বছরে শেষ হবে তার কোনো সঠিক উত্তর জানা নেই,তিনি আরো বলেন,সবে তো রাস্তার কাজ শুরু তার মধ্যে এই রাস্তা আনুমানিক ২শ ফিট দুরে দুরে পিট করে ফেলে রাখছেন ঠিকাদাররা,আবার ভারী বৃষ্টি হলে পিট গুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়,এই রাস্তা প্রকল্পের কাজটি ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের ত্বত্ত্বাবধানে ঠিকাদারদের দেওয়ায় তারা সঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা তাও তদারকিতে কাউকে দেখা যায় না। শুধু তাই নয় সাধারণ মানুষ চলাচলে সরু জায়গা দিয়ে পথচারীর সাথে পথচারীদের ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ হতে দেখা যায়।এমন কি একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের পথটি পিছলা হয়ে নারী-পুরুষদের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে দেখা যায়।

একজন পথচারী জানান,শুধু দক্ষিণখানের এই প্রধান সড়কটি নয় তার আশপাশের কিছু শাখা রাস্তাও এভাবে খুদে সাধারনের চলাচলের বেকায়দা অবস্থা। তিনি আরো জানান,সঠিক ভাবে এই সড়ক খোড়াখুড়ির পরিকল্পনা নেই,যদি সঠিক ভাবে পরিকল্পনা থাকতো তাহলে এলাকাবাসীর এতো দুর্ভোগে পোহাতে হতো না।দক্ষিণখানের সাধারণ মানুষ জানায়,”বর্তমান রাস্তার যে খোড়াখুড়ির অবস্থায় আছে তাতে কোনো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে পারবে না শুধু তাই নয় কোনো মানুষ মারা গেলে তার লাশ নিয়ে দাফন করতে কবরস্থানে যাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। এছাড়া দক্ষিণখানে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন আর এ ভবন গুলোতে কোনো কারনে আগুন ধরে তাহলে ফায়ার সার্ভিসও প্রবেশ করতে পারবে না,” এমন একটা অবস্থা আছে দক্ষিণখান বাসী।

একজন স্থানীয় সাংবাদমাধ্যকে বলেন,গত মে মাসে দক্ষিণখান গাওয়াইর কাজি বাড়ি রোডে মসজিদ গলিতে উচুতলার ভবনের দেয়াল ধ্বসে টিনসেড বাড়ির ওপর পড়লে এই বাড়িতে বসবাসরত মো: জালাল আহমেদ(সমকাল পত্রিকার, একাউন্টেন) ও তার শিশু মেয়ে সুরাইয়া শরিরে পড়লে রাস্তার বেহালদশার কারনে তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়া শিশু কন্যা সুরাইয়ার মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে।

সরেজমিনে দক্ষিণখান বাজার থেকে কষাইবাড়ি পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় রাস্তা মাঝে মাঝে খোড়াখুড়ি আবার কোথাও কোথাও বড় বড় সিমেন্টের পাইপ ফেলে ও বেকো মেশিন ফেলে রাখা হয়েছে মাসের পর মাস,মাসখানেক আগে এই রাস্তার কাজ পরিদর্শন করতে আসেন ঢাকা মহানগর উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম,ঢাকা-১৮ আসনের এমপি মো: খসরু চৌধুরী ও সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমান্ডার, সে সময় ঢাকা উত্তরের মেয়র দক্ষিণখান বাসীকে জানান আগামী নভেম্বরে রাস্তায় চলাচলে উপযোগী হয়ে যাবে,এদিকে দক্ষিণখানবাসী জানায়,এভাবে মাসের পর মাস রাস্তার কাজ বন্ধ থাকলে বা ধীর গতি হলে কিভাবে মেয়র সাহেবের কথা ঠিক থাকবে? এভাবে রাস্তা প্রকল্পের কাজ থেমে থেমে চলতে থাকলে অচিরেই দক্ষিণখান এলাকা মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।

দক্ষিণখানের স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে বলেন,একাধিক মেশিনারিজ বাড়িয়ে এবং লোকবল বাড়িয়ে এবং ড্রেনেজ ব্যবস্তা করে রাস্তাটির কাজ শেষ করে সাধারণের চলাচলের উপযোগীর জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।