সাতক্ষীরা: পবিত্র ঈদুল আযাহ উপলক্ষে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত রূপসী ম্যানগ্রোভ (মিনি সুন্দরবন) পর্যটন কেন্দ্র। ঈদের ছুটিতে বিনোদনের পরশ পেতে সব বয়সী মানুষের পদচারণায় পরিপূর্ণ হয়েছে স্পটটি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার শীবনগর এলাকার এক সময়ের নদী ভাঙন রোধে নেওয়া প্রকল্প রূপ নিয়েছে পর্যটন খ্যাতে। সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা বনটি ১৫০ একর জমিতে বিস্তৃর্ণ। যার মধ্যে ৫০ একর জুড়ে বন, ১০ একর জমির বুকে রয়েছে “অনামিকা লেক”। বাকি স্থানে রয়েছে নানা বিনোদনের ব্যবস্থা। জেলার সদর হতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে ইছামতি নদীর তীরে গড়ে তোলা বিনোদন কেন্দ্রটিতে সহজে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখানে সুন্দরবনের কেওড়া, বাইন, গোলপাতা, কাঁকড়া, নিম, সুন্দরী, হরকচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ উদ্ভিদ রয়েছে। শিশুদের জন্য শিশুপার্ক, জীবন্ত ও কৃত্রিম বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি রাখা হয়েছে। বড়দের জন্য ইলেক্টিক নাগরদোলনা, নদীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা। পাশাপাশি রান্না ঘর, সেমিনার কক্ষ, রেস্ট হাউস, নামাজের কক্ষ, নারী-পুরুষের জন্য আলাদা ওয়াশরুম, সার্বক্ষনিক বিদ্যুত ও ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা আছে বিনোদন কেন্দ্রটিতে।

ঘুরতে আসা পর্যটক সুশীলগাথী গ্রামের আলতাফ হোসেন জানান,আমি ঢাকায় থাকি। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে এখানে ঘুরতে আসছি। জায়গাটি অনেক সুন্দর। যদি এখানে আসার জন্য রাস্তাটি আরো বেশি প্রসস্ত করা যায় ভাল হবে। দেবহাটার আশরাফুল গাজী জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে আসছি। এসে দেখলাম আমাদের মত অনেক মানুষ এসেছে। এখানে এসে একদিকে যেমন নদীর সৌন্দর্য অন্যদিকে সুন্দরবনে না গিয়েও সেই রূপ উপভোগ করতে পারছি।
জেলা শহর থেকে আসা পর্যটক জেসমিন নাহার জানান, সময়ের অভাবে সুন্দরবনে যাওয়া হয় না। কিন্তু এখানে আসলে সুন্দরবনের স্বাদ পাওয়া যায়। তাই মাঝে মধ্যে আসি এখানে। পর্যটকদের জন্য যদি আরো সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কেন্দ্রটি আরো সমৃদ্ধি হবে।

বিনোদন কেন্দ্রেটির ম্যানেজার সোহেল রানা জানান, সারা বছরের তুলনায় ঈদ, পহেলা বৈশাখসহ বিশেষ দিনে রূপসী ম্যানগ্রোভ বিনোদন কেন্দ্রে ব্যাপক পর্যটকের পদচারণ ঘটে। এবছর ঈদের দিন থেকে প্রচুর মানুষ এখানে আসছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ মোতাবেক বিনোদন কেন্দ্রটি পর্যটকদের উপযোগী করে তুলতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছি এবং সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত তেমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তার সাথে পর্যটকের উপস্থিতি বজায় রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, রূপসী ম্যানগ্রোভ দেবহাটার পরিচিতির মাধ্যম। এখানে সব বয়সীদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রটি নদী ভাঙন রোধ করে মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছে সেই সাথে রাজস্ব আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে আরো সুযোগ সুবিধা যুক্ত করতে কাজ চলমান রয়েছে।