দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বসবাসরত মানুষের নিরাপত্তা, খাদ্য সংকট নিরসন ও সাগরপথে দ্রুত বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য দাবি জানিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী।

শনিবার (১৬ জুন) বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিং কালে সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের ওপার থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজকে লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি নিক্ষেপ করছে। শুধু তাই নয় প্রচন্ড গুলিবর্ষণে সেন্টমার্টিন মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অঘোষিতভাবে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপবাসীর মাঝে খাদ্য ও মেডিসিন সংকট দেখা দিয়েছে। এমনকি টেকনাফ সদরের সাথে জাহাজ, ট্রলার ও স্পীড বোডে যোগাযোগ করতে পারছে না কেউ।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এর আগেও মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশী নিহত সহ অনেকেই আহত হয়েছে। মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান বারবার বাংলাদেশের আকাশ সীমানা লংঘন করে উড্ডয়নার ঘটনাও আমরা দেখতে পেয়েছি। শুধু তাই নয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর শত শত সদস্যরা অস্ত্রসহ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে করে আত্মসমর্পণের ঘটনাও উদ্বেগের বিষয় । বলতে গেলে এইসব ঘটনার কারণে সীমান্তবর্তী উখিয়া টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে বসবাসরত জনগণ চরম উৎকন্ঠা ও আতঙ্কে জীবন যাপন করছে। কয়েক বছর ধরে নাফ নদীতে জেলারা মাছ ধরতে যেতে পারছে না। সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপহরণেরণের ভয়ে দরিদ্র কাঠুরিয়া বনেও যাচ্ছে না।

অপরের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, অনির্বাচিত বর্তমান সরকার পররাষ্ট্রনীতি নতজানুর কারণে চরম ভাবে কূটনৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় মিয়ানমার একের পর এক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজকে লক্ষ করে গুলিবর্ষণ করে যাচ্ছে। এ সব বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো প্রতিবাদ করতে ব্যর্থ হয়েছে এই সরকার। বারবার ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন সরকারের উচিত মিয়ানমারের সাথে দ্বী -পাক্ষিক বৈঠক করে দ্রুত এই বিষয়গুলো সমাধান করা।

উখিয়া – টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরী সেন্টমার্টিনের ৩ হাজার পরিবার ও ১০ হাজার জনগোষ্ঠীকে বসবাসের নিরাপত্তা, খাদ্য সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া ও সমুদ্র পথ দিয়ে বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন টেকনাফের মানুষ নাফ নদীতে মাছ ধরতে পারছে না দীর্ঘদিন ধরে। অপর দিকে অপরকারীদের ভয়ে পাহাড়েও যেতে পারতেছে না টেকনাফের লোকজন। এসব বিষয় নিয়ে সরকারের বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন মাথা ব্যথা নেই। সেন্টমার্টিনের লোকজন ঈদুল আজহা কিভাবে পালন করবে সেই ব্যাপারে সরকারের স্পষ্ট কোন নির্দেশনা নেই। অতি দ্রুত সেন্টমার্টিন লোকজনের জন্য পশুর ব্যবস্থা করা সহ যাতে সুন্দর ভাবে ঈদুল আজহা পালন করতে পারে তার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিকট জোর দাবী জানান।