পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় আওয়ামী লীগ অফিসসহ ঘোড়া মার্কার পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল এর প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী, সমর্থক আহত হয়েছে। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে এমন অভিযোগ করেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল। গত রোববার (৯জুন) রাত থেকেই উপজেলার প্রায় ২০ সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা সহ আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী প্রার্থী খান মোঃ আবুবককর সিদ্দিকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো রাকিব ফরাজি, সেলিম সিকদার, রাব্বি ও শাকিল গাজী।
জানাগেছে, গত ৯ জুন মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কাপ পিরিচ মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মোঃ আবুবকর সিদ্দিক বিজয়ী হলে ঐ রাতেই শুরু হয় সহিংসতা। উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী, মধ্য আন্দুয়া, আন্দুয়া আবাসন এলাকা, সন্তোষপুর, ভিকাখালী, উত্তর আমড়াগাছিয়া, সুলতানাবাদ এলাকায় হামলা চালায় বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মোঃ আবুবকর সিদ্দিক এর কর্মী সমর্থকরা। এঘটনায় আহতরা হলো, মেহেদী হাসান রাতুল, আইয়ুব আলী মৃধা, মিরাজ খলিফা, রিয়াজ খলিফা, ফিরোজ হাওলাদার, বাসুদেব হাওলাদার, নিজাম সিকদার, মাসুম হাওলাদার, মনির হাওলাদার, সাইফুল ইসলামসহ ইলিয়াস খলিফা। যাদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মোঃ আবুবকর সিদ্দিক এর একনিষ্ঠ কর্মী রাকিব মৃধা নামে মামলা থাকার পরও তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ এমন অভিযোগ করছে ঘোড়া মার্কার পরাজিত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল। তাছাড়া রাকিব মৃধার ভয়ে এলাকা ছাড়া ঘোড়া মার্কার প্রায় কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক বলে জানাগেছে।
ঘোড়া মার্কার পরাজিত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবেই তাই বলে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা ও সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করা হবে কেন। আসলে খান মোঃ আবুবকর সিদ্দিক তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শান্তিপূর্ণ মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে অশান্তিতে রুপান্তরিত করতে চাচ্ছে। তাই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাতে অন্তত মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে কাপ পিরিচ মার্কার বিজয়ী চেয়ারম্যান খান মোঃ আবুবকর সিদ্দিক বলেন, আমি যদি মির্জাগঞ্জের মানুষের পাশে না থাকতাম তবে তারা আমাকে তৃতীয় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতো না। আসলে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে অন্যের উপর দোষ চালিয়ে দেয়। তবে যারা আওয়ামী লীগ অফিসে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করেছে তাদের শাস্তির দাবী জানাই। সে যারই লোক হোক না কেন।
মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হাফিজ জানান, নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে প্রতিদিনই। এছাড়া বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।