হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় সরকারি চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে দিয়ে ঘুরে বাংলাবাজার হয়ে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানেই সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায় প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন—‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘বাতিল করো, বাতিল করো, কোটা পদ্ধতি বাতিল করো, কোটা বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই’

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এ বৈষম্য আমরা কখনো মানব না। ২০১৮ সালে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সে সময় কোটা পদ্ধতি বাতিল করে। কিন্তু হাইকোর্ট সেই কোটা পুনর্বহাল করেছেন, হাইকোর্টের রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি। মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদের কিসের অবদান? তারা কেন এত সুযোগ পাবে? নাতি-নাতনি আর আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমান।’

চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী জাহিদ নামে একজন। বলেন, ‘ ২০১৮ সালে অনেক বড় একটা আন্দোলনের পর এই পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছিল কিন্তু এই রায়ে সেই বৈষম্য রয়েই গেল। এই বৈষম্য দূর করার জন্য যদি এক মাস রাজপথে থাকতে হয়, তাহলে আমরা থাকব। তবে এই বৈষম্য দূর করেই ছাড়ব।’

উল্লেখ্য, গতকাল এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা বহালের রায় দেন। কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না। পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। এর আগে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।