লালমনিরহাটের পৌর এলাকার পূর্ব সাপটানা উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি বিষয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অশ্লীলভাষায় গালীগালাজ ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায় ওই বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম।
উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে বিদ্যালয় দ্রুত ছুটি দিয়ে সটকে পরে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক। জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম ফেরদৌস আলম। তার বাবার নাম বছির মিয়া, তিনি পাশ্ববর্তী বানিয়ার দিঘি এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ১ জুন বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী প্রচণ্ড গরমের কারণে বোরকার স্কার্ফ খুললে অভিযুক্ত শিক্ষক সবার সামনে অশ্লীল ভাষায় গালি দেন। এরপর সে বাসায় গিয়ে কেঁদে কেঁদে তার অভিভাবককে ঘটনাটি জানায়।
এ ঘটনার পর রোববার প্রধান শিক্ষককে মৌখিকভাবে জানানোর পর কোন সুরহা হয়নি। উল্টো ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যেতে বলে।পরবর্তীতে সোমবার ৫জুন ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসা মাত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে যায় এবং বিদ্যালয়ের মুল ফটকে অবস্থান নেয়। সেখানে সংবাদকর্মীদের উপস্থিত বুঝতে পেরে বিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল শিক্ষক রুমে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন ধরনের তথ্য না দেয়ার হুমকি দিয়ে রাগান্বিত হয়ে সকল শিক্ষককে বাড়ি যেতে বলেন।
এরপর কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়া শফিকুল সাংবাদিকদের সাথে আশোভন আচরণ করতে থাকেন, এবং সেখান থেকে কৌশলে প্রধান শিক্ষক গোলাম সরোয়ারকে পালিয়ে দেন। শফিকুল উপস্থিত সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন, তখন সাংবাদিকরা ঘটনার বিষয়ে পুনরায় জানতে চাইলে স্থানীয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শুভর বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে শফিকুল ও সটকে পরেন। সেখানে সাংবাদিকদের সাথে কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জানায় পকেট কমিটির মাধ্যমে গোপনে ওই স্কুলের সভাপতিত্ব পান শফিকুল।
শফিকুলের ছত্র ছায়ায় শিক্ষক ফেরদৌস নিজের খেয়াল খুশিমত শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ ও মারধর করে আসছে। ফেরদৌসের এঘটনা বিদ্যালয়ে চাউর হওয়ার পরে তাকে তিনি পালিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে শফিকুলের বিরুদ্ধে।
আরও জানা যায়, শফিকুল লালমনিরহাট পৌর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডের রহমান চকিদার ছেলে। এক সময় শফিকুল পুলিশের সোর্স ও দালালী করে চললেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতির পদপান।পদ পেয়ে একেবারে পরোয়া হয়ে উঠেন। তেমনি ছাত্রী ও শিক্ষকের এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পরিবারটির বিপক্ষে অবস্থান নেন শফিকুল।
পরিবর্তীতে এ বিষয়ে আবারও প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বার্তাবাজার/রাআ