দেশে দুর্নীতির সঙ্গে এখন দলের বড় পদের নেতারা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা: সংকট ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমাদের ডলার সংকটের মূল্য দিচ্ছে জনগণ। মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে। এই বাড়তি কর জনগণ দিচ্ছে। সংসার চলে না মানুষের। এখন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত পার্টির বড় পদের লোক। বেনজীর ও আজিজ দুই জনের চরম আগ্রাসন দেখলাম, এখন দেখা যাক দুদক কী করে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি হবে, অর্থনীতি ধনিক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। পাকিস্তানের ২২ পরিবার থেকে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এসেছে, এখন কত শত পরিবার তার হিসাব নেই। গোষ্ঠীতান্ত্রিক অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতা না, সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে। আমাদের রাষ্ট্র ক্ষমতার যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেখান থেকে সমাজ অনেক দূরে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেই নাই, অথচ পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল তুলে নিয়েছি। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন— তিনি এ বিষয়ে জানেন না। এভাবে অগোচরে কাজ হচ্ছে।

আলোচনা সভায় ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে— যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি বিপদে পড়ার আরেকটি বড় কারণ প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে একের পর এক মেগা-প্রজেক্ট গ্রহণ করার হিড়িক। এরকম স্বল্প প্রয়োজনীয় প্রকল্প যদি গৃহীত হতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশ খুব শিগগিরই শ্রীলঙ্কার মতো ঋণের ফাঁদে পড়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা থেকে এ বছর আরও ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এই খাতে। পাশাপাশি বাংলাদেশের জিডিপির অনুপাত কমতে কমতে ৮ শতাংশের কাছাকাছি এসে গেছে— যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্ন। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান মারাত্মক রাজনৈতিক সংকট অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে বড় সড় বাধা হয়ে যাচ্ছে।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের পেছনে দুজন মাস্টারমাইন্ড ছিল। তার মধ্যে একজন হচ্ছে বেনজীর আহমেদ ও আরেকজন প্রয়াত হোসেন তৌফিক ইমাম। এর মধ্যে বেনজীর বর্তমান সরকারের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। তিনি পুরো পুলিশ প্রশাসনকে এভাবে অপব্যবহারের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, সেটা কি সরকারের জানা ছিল না? সরকার কি এর সুবিধা ভোগ করেনি? এখন তাকে টার্গেট করেছি তাই ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। এরাই ১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে নষ্ট করে দিয়েছে।’