বিতর্ক যেন ছাড়ছেই না পটুয়াখালী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। এরই মধ্যে পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা দেয়ার কারনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলামকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে কারন দর্শনের নোটিশ দেন জেলা ছাত্রলীগ।
জানাগেছে, দীর্ঘদিন যাবত আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ থাকায় বিলুপ্ত ছিলো। তাই সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য ২৫ মে শনিবার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুল ইসলাম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোঃ নাসিম মৃধাকে সভাপতি ও মোঃ মিরাজ খানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর সেই কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তি সভাপতি জাহিদুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করার কিছুক্ষণ পরই সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লিখেন আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কমিটির বিষয়ে অবগত নন তিনি। আর এতেই বিপত্তি বাদে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে।
কিছুক্ষণ পরই দেখা যায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ তানভীর হাসান আরিফের সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলামকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে কারন দর্শনের নোটিশ দেয়া হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় জেলা ছাত্রলীগের অনুমতি ব্যতিত এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুল ইসলামকে অবগত না করে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি দেয়ার অভিযোগ উঠে সভাপতি জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তাই সভাপতি জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার উপযুক্ত কারনসহ আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব চান জেলা ছাত্রলীগ। সেই সাথে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেন জেলা ছাত্রলীগ।
এদিকে, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর মোঃ সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও মোঃ তানভীর হাসান আরিফকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এতে ৩৯ জনকে সহ-সভাপতি, ৯ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ৭ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছিলো। কমিটি পাওয়ার ৮ মাসের মধ্যেই কলাপাড়ায় এক ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পদ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। যে কারনে নিজের পদ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে দৌড় ঝাপ করতে হয়েছিলো তাকে। বির্তক রয়েছে সভাপতি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিউজ করায় নয়ন মৃধা নামে এক সাংবাদিককে তার মদদে মারধরের শিকার হতে হয়। যা ঐ সময়েই পটুয়াখালী সদর থানায় একটি জিডি করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক কিন্তুু কোন অদৃশ্য ক্ষমতাবলে সভাপতি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেয় না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ ১ বছর দেয়া হলেও প্রায় দেড়বছর ধরে চলছে এই কমিটি। তাই সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষে নতুন করে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হোক এমনটাই দাবি জানিয়েছেন পদ প্রত্যাশীরা।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুল ইসলাম জানান, আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যে কমিটি দেয়া হয়েছে তার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না, আমার সাক্ষর হয়তো কেউ নকল করে দিয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম তার নিজের হাতে লিখেছে। এখন কোন ভয়ে বা কিসের ভয়ে অস্বীকার করছে সেটা বুঝতে পারছি না। তবে বিগতদিনে যে কমিটি গুলো দেয়া হয়েছে তাতে আসাদুল ইসলামের সাক্ষর দেখলেই কিন্তুু মিলে যাবে যে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি তার সাক্ষরেই দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করলে জেলা ছাত্রলীগের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তুু সেখানে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেউই জেলা ছাত্রলীগের অনুমতি নেয়নি। যেখানে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটির ব্যাপারে জানেই না সেখানে সভাপতি এককভাবে কমিটি দিতে পারে না। তাই সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম কারন দর্শনের নোটিশ দেয়া হয়েছে।
বার্তা বাজার/এইচএসএস