ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মুন্সীর বিরুদ্ধে সালিশের নামে প্রতারণা করে ভূমি অধিগ্রহনের ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন হানিফ মুন্সী। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কুদ্দুছ মিয়ার পরিবারের পক্ষে তার নাতনী জুঁই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তৃতায় বলা হয়, আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা মৌজার ৪৪০/৩৩১৮ নং দাগের ১ একর ভূমি আশুগঞ্জ নৌবন্দরের অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার স্থাপনের জন্য সরকার অধিগ্রহণ করে। অবকাঠামো বিলসহ যার অধিগ্রহণ মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৬ কোটি, ৮৪ লাখ, ৪১ হাজার ৯৫৩ টাকা। ভুক্তভোগী পরিবার উক্ত ভূমির বৈধ মালিক হলেও একই উপজেলার মৈশার গ্রামের শাহজাহান মিয়া গং জাল দলীল ও ভুল বিএস ক্ষতিয়ানের মাধ্যমে অধিগ্রহণাৃত ভূমি তাদের নামে খারিজ করে নেন। নামজারি করতে গিয়ে ১৯৫২ সালের ২০ ডিসেম্বর সম্পাদিত ৪৩৬৪ নং একটি জাল দলীলের অনুলিপি প্রদর্শন করা হয়। অথচ রেকর্ড রোমে তল্লাশী দিয়ে পাওয়া যায় ৪৩৬৪ নং দলীলটি সরাইল উপজেলার বেহাইর মৌজার- যা ১৯৫২ সালের ৪ ডিসেম্বর সম্পাদিত হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার উক্ত ভূমির প্রকৃত ওয়ারিশের নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে বৈধ মালিক হওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করে। ফলে অধিগ্রহনের টাকা আটকে যায়। অর্থাৎ কোন পক্ষের মাধ্যমেই তা উত্তোলন করা যাচ্ছিলনা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মুন্সী ও বিএনপি নেতা জাকির হোসেন বিবাদমান দু পক্ষকে সমঝোতার মাধ্যমে অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলন বন্টন করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাব মেনে নিয়ে মীমাংসার স্বার্থে তারা মামলা তুলে নেয়। এসময় হানিফ মুন্সী ও জাকির হোসেন কাদের ৪ জনের নিকট থেকে নন জুডিশিয়াল খালি স্ট্যাম্পে এবং স্ব স্ব একাউন্টের ব্যাংক চেক (টাকার অংক ছাড়া) স্বাক্ষর করিয়ে নেন। পরে সঝোতার মাধ্যমে শাহজাহান মিয়ার মাধ্যমে অধিগ্রহনের টাকা উত্তোলন করানো হয় এবং তাদের প্রাপ্য ৬ কোটি টাকা হানিফ মুন্সীর নিকট জমা রাখা হয়। যা পরবর্তীতে ওয়ারিশদের মাঝে সমঝোতার ভিত্তিতে বন্টন করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু হানিফ মুন্সী উক্ত টাকা ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করে না দিয়ে ৩ বছর ধরে আত্মসাৎ করে রেখেছে বলে সংবাদ সম্মলনে ভুক্তভোগীরা জানান। তার নিকট বার বার ধর্ণা দিলেও নানা অযুহাতে টাকা না দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। এব্যাপারে এলাকার প্রায় সবাই অবগত রয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। ভুক্তভোগীরা জানান, তারা মামলা মোকদ্দমায় টাকা পয়সা খরচ করে বর্তমানে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এই শোকে আলম খাঁ নামে মামলার বাদী স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন। তার ছেলে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। সম্প্রতি বাধ্য হয়ে তারা আবারো আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য কুদ্দুছ মিয়া, জালাল খাঁসহ পরিবারের সদস্যরা।
বার্তা বাজার/এইচএসএস