চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারত গিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। কলকাতার নিউ টাউনের যে ফ্লাটে খুন হয়েছেন এমপি আনার সেটা ভাড়া নিয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন নামের এক ব্যক্তি। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীও এই শাহীন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আক্তারুজ্জামান ও আনোয়ারুল আজীম পুরানো বন্ধু। আক্তারুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। ঢাকায় গুলশানে আক্তারুজ্জামানের বাসা রয়েছে। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে তাঁর বাসা। তাঁর ভাই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান।

কলকাতার পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাট (ট্রিপলেক্স) নাজিয়া বানু নামের এক নারীর কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিলেন মো. আক্তারুজ্জামান। নাজিয়ার স্বামী সন্দ্বীপ রায় ওই ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিক। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কলকাতার ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার সময় আক্তারুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন; যা ভাড়ার চুক্তিপত্রেও উল্লেখ আছে।

তদন্তকারী একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ও আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীনের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডিসহ আন্তর্দেশীয় বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার তথ্য রয়েছে। দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহ আমান জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করেন তিনি।

তবে আক্তারুজ্জামান এখনো ধরা পড়েননি। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসে আক্তারুজ্জামান শাহীন। এমপি আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে সে ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যায়। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যায় দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রে শাহীনের ঠিকানা নিউ ইয়র্কে ৩৭৯ ইস্ট সেভেন্থ স্ট্রিট ব্রুকলিন এলাকায় বলে জানা গেছে।