ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সম্পদ ও আয়সহ নানা তথ্য উঠে এসেছে। চলমান ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে এ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ জুন।

হলফনামা বিশ্লেষণ করে জানা যায়, কাপ-পিরিচ প্রতীকের বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান এইচএসসি পাশ। তার আয়ের উৎস উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে প্রাপ্ত সম্মানী ও বাসা ভাড়া বাবদ ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। নিজের নগদ টাকা রয়েছে ৩ লক্ষ ও ব্যাংকে জমা ৫০ হাজার ৯৭৭ টাকা। ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল ও ১২ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। নিজের নামে অকৃষি জমি ৫ শতাংশ।

দোয়াতকলম প্রতীকের উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খান খান বেলায়েত হোসেনের হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন এম কম পাশ। তবে তিনি হলফনামায় আয়ের উৎস উল্লেখ করেননি। নগদ ও ব্যাংকে জমা দেখিয়েছেন ৯৬ লক্ষ ১৪ হাজার ৩৮২ টাকা। তার ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। গাজীপুর অকৃষি জমি রয়েছে সাড়ে ৫২ শতাংশ।

উট প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ দেলোয়ার হোসেন এইচএসসি পাশ। তিনি ব্যবসা খাতে আয় দেখিয়েছেন আয় ৪ লক্ষ টাকা। নগদ অর্থ ১ লক্ষ ও ব্যাংকে জমা ২ হাজার টাকা। স্বর্ণ রয়েছে ২০ ভরি। ২ শতাংশ কৃষি জমি রয়েছে।

টেলিফোন প্রতীকের সদ্য পদত্যাগকারী পাঁচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান এম কম পাশ। তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, কৃষিখাত থেকে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ও ব্যবসা খাত থেকে ৩৫ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা বাৎসরিক আয় হয়। তার ১২ লক্ষ ও ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের দুইটি প্রাইভেটকার রয়েছে। স্বর্ণ রয়েছে ৪৮ ভরি। কৃষি জমি রয়েছে ২৬.২৫ শতাংশ। তার ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। তবে তার ব্যাংক ঋণ রয়েছে ৩ কোটি ৯৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮১৬ টাকা।

মোটরসাইকেল প্রতীকের আফিনজা জুয়েলার্সের চেয়ারম্যান কাজী মনিরুল হক হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। তিনি ব্যবসা খাতে আয় দেখিয়েছেন ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। নগদ অর্থ ৭০ হাজার ও ব্যাংকে জমা আছে ৮০ লক্ষ টাকা। তার ৪১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট রয়েছে। ব্যক্তিগত স্বর্ণ রয়েছে ২৯৫ ভরি। অকৃষি জমি রয়েছে ১৫৮ শতাংশ। তার ৭২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৪৭১ টাকা ঋণ রয়েছে।

আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ তাহিদুর রহমান মুক্ত এম এ পাশ। তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ব্যবসা খাত থেকে ৪৪ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা ও অনান্য খাত থেকে ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা বাৎসরিক আয় হয়। অস্থায়ী সম্পদের মধ্যে তার কাছে নগদ আছে ১২ লক্ষ ৪৫ হাজার, ব্যাংকে জমা ৩১ লক্ষ ৯৮ হাজার, বৈদেশিক মুদ্রা ৪৪ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা ও সঞ্চয়পত্র ১৯ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ১৪ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ও ৩৯ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা মূল্যের এপার্টমেন্ট রয়েছে। তার ২০ ভরি স্বর্ণ ও ৬২ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে।

শালিক প্রতীকের উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি আহসান উদ্দৌলা রানা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। তার ব্যবসা খাত থেকে আয় ২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। নগদ অর্থ রয়েছে ১ লক্ষ টাকা। ১০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। দুইটি ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা।

হেলিকপ্টার প্রতীকের আলমার্স জুয়েলার্স লিমিটেডের পরিচালক আবুল খায়ের খান বুরুজ এম এ পাশ। তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার ব্যবসা থেকে ২ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা ও চাকুরি থেকে ২ লক্ষ টাকা আয়। নগদ টাকা রয়েছে ৫ লক্ষ, ব্যাংকে জমা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। তার ৬ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার ও ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের ১ একর কৃষিজমি রয়েছে৷ তিনি তার স্ত্রীর নামে ১২ ভরি স্বর্ণ ও ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৪৮ শতাংশ কৃষি জমি উল্লেখ করেছেন।

জোড়া ফুল প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইতালি প্রবাসী শেখ আব্দুর রহমান জিকো হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি অষ্টম শ্রেণি পাশ। তার ব্যবসা থেকে আয় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ৩ লক্ষ টাকা। নিজের ৭ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। স্ত্রীর নামে ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি জীব ও ৮ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। নিজ নামে ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের ২ একর কৃষিজমি ও ৪ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৮ শতাংশ অকৃষি জমি আছে। একটি একতলা দালান রয়েছে, যার মূল্য ১৫ লক্ষ টাকা। তার ৪০ লক্ষ টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে।


বার্তা বাজার/এইচএসএস