কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানকে ফুলের মালা পরিয়েছেন থানার ওসি। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দৌলতপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদের গলায় মালা পরান। যার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, ওসি হাসিমুখে ফুলের মালা পরাচ্ছেন নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে। এ সময় পাশে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই এই বিষয়ে বলেন, এই ঘটনায় অনেক কিছু প্রমাণিত হয়। যেহেতু এই উপজেলা নির্বাচনে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিসুর রহমান কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া এবং প্রশাসনের নীরব ভূমিকার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন। সেহেতু অভিযুক্ত প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরপরই ওসির এমন কর্মকাণ্ড প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

পরাজিত প্রার্থী আনিসুর রহমান বলেন, আজ সকালে ছবিটি আমার নজরে আসে। রাতে দৌলতপুর থানার ওসি বুলবুল আহমেদকে ফুলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন। তাতে অনেক কিছু প্রমাণিত হয়। বিষয়টিতে খুব অবাক হয়েছি। আমি ছবিটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আনব।

অভিযুক্ত দৌলতপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে যদি কেউ নির্বাচিত হয়ে যান, তাহলে নিরপেক্ষতার আর কী থাকে? আপনি যখন চেয়ারম্যান হয়ে যান তার সঙ্গে আর নিরপেক্ষতার কী থাকে। তার সঙ্গে তো আমাদের চলতে হবে।

উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আপনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলুন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পোশাক পরা অবস্থায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা কোনো অবস্থাতেই একজন নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধির গলায় ফুলের মালা দিতে পারেন না। এটা করলে ওই এলাকায় পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এটা ঠিক নয়।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখছি বিষয়টি। সে আসলেই মালা পরিয়েছে নাকি মালা ধরে রেখেছে, এ বিষয়ে কথা বলে আপনাকে জানানো হবে।