শরীয়তপুর জেলা জজকোর্টের সরকারি কৌসুলি (জিপি) আলমগীর মুন্সীকে অপসারণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে জিপি আলমগীর মুন্সীর নামে থানায় মামলা দায়ের হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে আলমগীর মুন্সী আইন মন্ত্রণালয় থেকে শরীয়তপুর জজকোর্টের অতিরিক্ত জিপি পদে নিয়োগ পান। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত জিপি হন। এরপর ২০১১ সালে তাকে জিপি পদে নিয়োগ দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন যাবত সরকারি কৌসুলি (জিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আলমগীর মুন্সী। জিপি আলমগীর মুন্সী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জল আখন্দর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছিলেন। নির্বাচন সংক্রান্ত একটি গোপন নথি আলমগীর মুন্সীকে দেখতে দেননি এমন অভিযোগে গত ১৪ মে নির্বাচন অফিসারকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ ওঠে আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে। এরপর শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে বাদী হয়ে গত ১৫ মে আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে গত ১৯ মে ওই মামলা থেকে জামিন লাভ করেন জিপি আলমগীর মুন্সী। এরপর গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আলমগীর মুন্সীকে সরকারি কৌসুলি (জিপি) পদ থেকে অপসারণের জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন থেকে আইন সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৮০ (ক) অনুযায়ী নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকি, ভীতি প্রদর্শন ও বাধা প্রদান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আলমগীর মুন্সী একজন সরকারি কর্মচারী। আচরণে তাঁর আরও সংযত হওয়া উচিত ছিল। তিনি যে আচরণ করেছেন, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি জিপি পদে থাকার অযোগ্য বলে নির্বাচন কমিশনের মনে হয়েছে।

অভিযুক্ত আলমগীর মুন্সী বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। নির্বাচন কমিশন জিপির পদ থেকে আমাকে অপসারণ করেছে কি না, তা আমি জানি না। নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আমি কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি।

শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল মান্নান বলেন, জিপি আলমগীর মুন্সীকে অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখিছেন। এর আগে আলমগীর মুন্সী সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে লাঞ্চিত করেছিলেন।