বান্দরবানের রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়া এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) আইএসপিআর এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

কেএনএফ এর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সে ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়।

 

জানা যায়, সকাল ৯.২০ মিনিটের দিকে সেনা টহল দলটি সন্ত্রাসী কর্তৃক বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে পতিত হয়। বিস্ফোরণে আহত ১ সেনা সদস্যকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারযোগে দ্রুততার সাথে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক তুজাম (৩০) মৃত্যুবরণ করেন।

সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল কর্তৃক এ ধরনের আরও সম্ভাব্য আইইডি সনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহিদ সেনা সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে। তাদের এহেন মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী তৎপর রয়েছে।

এদিকে সেনাসদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মুজিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, এর আগে সার্জেন্ট হাবিবুর রহমান, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দীনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গত ১৬ মে-২০২৩ তারিখ ২ জন সৈনিককে মাইন বিস্ফোরণ ও গুলি করে হত্যা করা হয় এবং একজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনকে মাইন বিস্ফোরণ ও গুলি করে আহত করা হয়। আজ একজন নিহত হলেন। বিবৃতিতে অচিরেই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অপারেশনে এই সমস্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার আহবান জানান এবং সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।

 

ই.এক্স/ও.আর