মানবদেহে মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য দুধ অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদন। দুধে রয়েছে সঠিক মাত্রার প্রোটিন। যা শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে জাতি যত বেশি দুধ উৎপাদনে সমৃদ্ধ, সে জাতি ততো বেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তাই আমাদের প্রতিদিন দুধ পানের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব) ড. মো. নুরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১লা জুন) সাড়ে ১০টায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলায়নতনে সেমিনারটি আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ‘পুষ্টি ও জীবিকার উৎস হিসেবে পরিবেশ বান্ধব ডেয়রি’।

এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত স্কুল ও মাদ্রাসার শিশুদের দুধ পান করানো, বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আক্তার, আকিজ ডেইরি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক হারুর-অর-রশিদ।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, দুধের ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশে প্রায় ২ হাজার ৮শ কোটি টাকার গুঁড়োদুধ আমদানি করা হচ্ছে। যার মান নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে দুধের উৎপাদন বাড়লেও জনগণের মধ্যে বাড়ছে না দুধ পানের আগ্রহ। তাই দুধ বিক্রিতে সমস্যায় পড়ছেন দুগ্ধ খামারীরা। দুধের উৎপাদন বাড়াতে হলে দুধের ব্যবহার ও দুধ পানের অভ্যাসও গড়ে তুলতে হবে। প্রচারণার মাধ্যমে জন সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

অধ্যাপক (অব) এম এ সামাদ বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে দুধ মানসিক রোগীর জন্য খুবই উপকারী। পরিবেশ দূষণ কিংবা বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব খুবই সামান্য। খাদ্য শস্য উৎপাদনে ৭০% মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় সেখানে দুধ উৎপাদনে ৩০% মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে গোবর আমাদের কৃষির জন্য খুবই জরুরী। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি ও মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জৈব সার হিসেবে গোবর ব্যবহারের বিকল্প নেই।

ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকী বলেন, আজ দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলগুলোতে দুধ পান করানো হয়েছে। এতে করে শিশুরা যেমন দুধ খেতে উৎসাহ পাবে সেই সাথে তাদের বাবা মার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। সুস্থ, সবল ও মেধাবি জাতি গঠনের জন্য প্রয়োজন সচেতন নাগরিক। আশা করা যায় দিবসটির মধ্য দিয়ে সবার মাঝে একটু হলেও সচেতনা সৃষ্টি হবে।

বার্তাবাজার/এম আই