দেশের গন্ডি পেড়িয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া এখন সবচেয়ে বড় অনুকূল শ্রমবাজার তৈরী হয়েছে বাংলাদেশীদের জন্য। ২০২২ সালের পর কলিং ভিসায় প্রায় ৫ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী বেকার কর্মীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে মালয়েশিয়া তে। মালয়েশিয়ায় মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠের জাতিগোষ্ঠীর দেশ। বাংলাদেশ – মালয়েশিয়ার ধর্ম ু এক হলেও জীবন ধারন, পোশাক আশাক ও খাবারেও রয়েছে ভিন্নতা। কর্মক্লান্ত বাংলাদেশী প্রবাসীরা হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর দিনশেষে দেশীয় খাবারেই রসনার তৃপ্তি পেতে চান। আর তাদের চাহিদার ভিত্তিতে সারা মালয়েশিয়ায় অসংখ্য বাংলাদেশী খাবারের দোকান রেস্টুরেন্ট চালু হচ্ছে। আর এসব বাংলাদেশী খাবারের দোকানেই উপচে পড়া ভির লক্ষ্য করা গেছে। দেশীয় খাবারের পসরা সাজিয়ে বাঙালি ক্রেতাদের আকর্ষণ করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে ক্রেতা বিক্রেতার মিলন মেলায় পরিনত হয় কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাং সহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় শহরগুলো তে।

মালয়েশিয়া বর্তমানে কম বেশি প্রায় দেড় মিলিয়ন বাংলাদেশীর পদচারণায় মুখরিত। দেশটিতে মুসলিমদের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতালক। উপযুক্ত কারণ ছাড়া রোজা না রাখলে জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশী খাবারের মধ্যে যেমন পার্থক্য রয়েছে তেমনি ইফতারেও রয়েছে ভিন্নতা। মালয়েশিয়ার খাবার গুলো মিশ্র পচ্চিমা গেষা। বাংলাদেশীরা প্রথম প্রথম মালয়েশিয়ায় গিয়ে এসব খাবার খেতে পারেন না। এসব অভ্যাস্ত হতে সময় লাগে। যদিও এসব খাবার উন্নতমানের এবং স্বাস্থ্যকর। তখন দেশীয় খাবার বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ও নিজেরা পাক করে কেয়ে থাকেন। মালয়েশিনরা ইফতারে ছোলাবুট ও মুড়ি খেতে জানে না। অন্যদিকে সব শ্রেনীর বাংলাদেশী মূখরোচক খাবার হচ্ছে মুড়ি বুট, বেগুনী, আলুর চপ, পিয়াজো ও জিলাপি। এসব দেশীয় খাবারের লোভে প্রবাসীরা ভির করছেন দেশীয় রেস্তোরাঁর ইফতারির বাজারে। কুয়ালালামপুরের বুকিতবিনতাং বানিজ্যিক এলাকায় বাংলাদেশী জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট গুলো হচ্ছে, পিঠাঘর রেস্টুরেন্ট, ভিআইপি পিঠাঘর রেস্টুরেন্ট, রংধনু রেস্টুরেন্ট, আলো ছায়া রেস্টুরেন্ট, ব্যাচেলর পয়েন্ট রেস্টুরেন্ট। তাছাড়াও রয়েছে তেজপাতা রেস্টুরেন্ট, রসনা বিলাস রেস্টুরেন্ট, আপন রেস্টুরেন্ট, বাসমতি রেস্টুরেন্ট, রাধুনী বিলাস রেস্টুরেন্ট সহ অসখ্যা রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে যেগুলো তে শুধুমাত্র বাংলাদেশী খাবার পরিবেশন করা হয়।

তবে প্রবাসী ক্রেতারা বলছেন এসব খাবারের দাম একটু বেশি। তারপরও প্রসারের মাটিতে বসে এসব দেশীয় খাবারে ইফতার করে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। আর দেশীয় খাবার বিক্রতারা বলছেন আমরা যেসব উপকরণ দিয়ে বাংলাদেশী খাবার তৈরী করে থাকি সে সব উপকরণ সময়ের সাথে গাল্লা দিয়ে বাড়তেই থাকে। একবার দাম বাড়লে সেটা আর কখনো কমে না। তখন বাধ্য হয়ে বেশি দামেই এসব পন্য কিনগে হয়। এজন্য তুলনামূলক ভাবে দেশীর পন্যের দাম একটু বেশি হয়। তারপরেও প্রবাসে দেশী খাবার খেতে পেরে প্রবাসীরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাছাড়া মালয়েশিয়ায় বছরে লাখ লাখ বাঙালি ট্র্যুরিস্ট ভিসায় ঘুরতে আসেন। তাদেরও দেশীয় খাবারের চাহিদা মেটায় এই বাংলাদেশী রেস্তোরাঁ গুলো।