মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতরের সঙ্গে এবার যোগ হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখেও। একসঙ্গে দুই উৎসবের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভিড় বাড়ছে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণি-বিতানগুলোয়। কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী।

কেনাকাটা করতে পরিবার নিয়েই এসেছেন অনেকে। রোজার শুরুতে মানুষের আনাগোনা থাকলেও বিক্রি ছিল কম। তবে বেশ কয়েকদিন ধরে কেনাবেচা শুরু হয়েছে পুরোদমে। আর ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে শহরের দোকান ও মার্কেট গুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের ঈদের চেয়ে দেড়- দ্বিগুণ দাম বেশি রাখছেন দোকানিরা। রেডিমেড পোশাক ও জুতার দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। আর শুক্রবার ছুটির দিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণি বিতানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। হলিডে হকার্স মার্কেটের ফুটপাথের দোকানেও ছিল রমরমা কেনাবেচা।

বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত ছিল মার্কেট এবং ফুটপাথ। ছুটির দিন হওয়ায় চাকরিজীবীদের ভিড় ছিল বেশি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম প্রতিটি জামা-কাপড়ের দোকান। মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, রোজার শুরুর দিকে কেনাকাটা করতে পারিনি।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ এসেছি ঈদের নতুন জামা কাপড় কিনতে। তবে এবার জামা কাপড়ের দাম অন্য বছরের তুলনায় দেড়-দ্বিগুণ দাম বেশি। সরেজমিন দেখা যায়, শহরের সমবায় মার্কেট, প্যানোরমা প্লাজা, মার্ক টাওয়ার, টপটেন মার্ট, হক প্লাজা, আলমাছ পয়েন্ট, বেইলি টাওয়ার, সান্তনা মার্কেট, আল জয়নাল ট্রেড সেন্টার, জিরো বাজার, লুৎফা টাওয়ার, ইজি ফ্যাশন, সায়াম প্লাজা, হাসনাত স্কয়ার, লুৎফা টাওয়ার, সায়াম প্লাজা, বর্ষণ সুপার মাকেট, এফ রহমান সুপার মার্কেট, ফ্রেন্ডস মার্কেটে, সোলস্তা, আড়ৎসহ ছোট-বড় এসব মার্কেটগুলোতে অল্প সময়ের মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা সম্পন্ন করতে ব্যস্ত ক্রেতারা।

তবে অনেক ক্রেতা দামদরের চেয়ে পছন্দকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারী ক্রেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে হাতে সময় কম থাকায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোতে। পাশাপাশি কসমেটিকস, শাড়ি, জুতার দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতারা দর-কষাকষি করে ঈদের কেনাকাটা করছেন। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে চাষাড়া হলিডে মার্কেট ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ভিড় বেড়েছে। পছন্দ করতে পারলেই অত্যন্ত সহজে স্বল্প দামেই ক্রেতা পোশাক কিনতে পারছেন।

ফুটপাতের এসব দোকানগুলোয় নিম্ন, মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষদের পোশাক কিনতে দেখা যায়। সমবায় মার্কেটের নন্দন ফ্যাশন হাউসের মালিক মোহাম্মদ ওমর বলেন, এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ দুই উৎসবে ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক উঠিয়েছি।

রোজার শুরুতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। আশা করছি এবার বিক্রি ভালো হবে। বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, অনেকে আগে পোশাক সেলাই করে ব্যবহার করতেন। এবার রেডিমেড পোশাকের চাহিদা বেশি। ঈদ ও পহেলা বৈশাখের জন্য বাহারি ডিজাইনের পোশাকই বেশি পছন্দ করছেন নারী ক্রেতারা।

আর ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিনস প্যান্ট ও টি-শার্ট। পাশাপাশি দেশীয় কাপড়ের কদরও রয়েছে বেশ। বাবা-মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছেন সামির। তিনি বলেন, শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করেছি। পছন্দ মতো রেডিমেড প্যান্ট, শার্ট ও পাঞ্জাবি কিনেছি।