২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটির প্রথম নির্বাচনেও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। নানা নাটকীয়তার পর জাহাঙ্গীর প্রচারে না নামলেও সেই নির্বাচনে আজমত উল্লাকে হারতে হয়েছিল।

পরের নির্বাচনে ২০১৮ সালে জাহাঙ্গীর দলের মনোনীত প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হলেও দুই বছর আগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর মেয়র পদও হারান তিনি। ১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করে দলে ফিরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তবে এবার সিটি নির্বাচনে তার জোটেনি দলের মনোনয়ন।

মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরে যাননি সাবেক এ মেয়র। ফলে তার তৎপরতায় ১০ বছর আগে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছেন অনেকেই। ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর আলমের থাকা, না থাকার ওপর ভিত্তি করেই মিলাচ্ছেন সব হিসাব-নিকাশ।

কেন্দ্রীয় নেতারা নানা হুঁশিয়ারি দিলেও সিটি নির্বাচনে বেশ শক্তভাবেই মাঠে আছেন জাহাঙ্গীর। ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে তিনি আপিলও করেছেন। প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া তার মায়ের নামে জমা দেওয়া মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিজের মনোনয়ন না টিকলেও জাহাঙ্গীরকে যে সহজে নির্বাচন থেকে সরানো যাবে না তা মোটামুটি স্পষ্ট।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহ বাদশা বলেন, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গ্যারান্টার হওয়ায় ঋণখেলাপি হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি আইনি লড়ায়ে বৈধতা পাবেন। কর্মীবান্ধব ও জনপ্রিয় এ মেয়র প্রার্থী আগে থেকেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। নির্বাচনে প্রস্তুত বলেই তিনি তার মাকেও প্রার্থী করেন।

কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একা থাকলে মেয়র প্রার্থী হিসাবে ভোটকক্ষে একজন করে এজেন্ট পাবেন আর মা-ছেলে দুজন প্রার্থী হলে ভোটকক্ষে দুজন করে এজেন্ট দিতে পারবেন।

জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান নির্ভার হবেন। অপরদিকে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র গৃহীত হলে আজমতের নির্বাচনি বৈতরণী পাড়ি দেওয়া কঠিন হবে বলে অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এদিকে প্রার্থিতা বাতিলের পর কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙা রাখতে তিনি হাসিমুখে কথা বলছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।

অপরদিকে জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে পারবেন কী না-তা নিয়ে নগরজুড়ে চলছে আলোচনা ও ব্যাপক কৌতূহল। যদি তিনি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকেন তবে ভোটের হিসাব হবে অন্যরকম।