বিশ্ব দুগ্ধ দিবস- ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩১ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়ের সভাকক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ডেয়ারি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম বলেন, দুধ প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ খাবার। দেহের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান দুধে সুষমভাবে উপস্থিত থাকায় দুধকে সুষম খাদ্য বলা হয়। দুধে উপস্থিত ল্যাকটোজ মানুষের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকোষ বর্ধনে সহায়তা করে। দুধ দৈহিক গঠন, মজবুত হাড় গঠন ও রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। জন্মের পর থেকে ৫-৭ বছরের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্কের ৯০ ভাগ বর্ধিত হয় বলে এসময়ে দুধের প্রয়োজনীতা সবচেয়ে বেশি। যে জাতি যতবেশি দুধ পান করে, সে জাতি তত বেশি মেধাবী হয়।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৩ দশমিক ০৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়। অর্থাৎ মাথাপিছু দৈনিক দুধের গড় প্রাপ্যতা ২০৮ দশমিক ৭০ মি.লি.। যেখানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে মাথাপিছু দুধের প্রাপ্যতা ৪২৭ মি.লি. এবং পাকিস্তানে ৫১৫ মি.লি.। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২৫০ মি. লি. দুধ প্রয়োজন। সে হিসেবে দেশে বাৎসরিক ১৫ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মেট্রিক টন দুধ প্রয়োজন। দুধের ঘাটতি পূরণে প্রতি বছর দুই হাজার আটশো কোটি টাকার গুড়োদুধ আমদানি করতে হয়। তবে আমদানিকৃত সকল গুড়োদুধের মান নিয়ে সংশয় রয়েছে।

এসময় বাকৃবির পশু পালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকী, অধ্যাপক (অব) ড. এম এ সামাদ খান, অধ্যাপক ড. রায়হান হাবিব ও সহযোগী অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুম।

ড. আশিকুল ইসলাম বলেন, পর্যাপ্ত দুধ উৎপাদনের জন্য আমাদের দেশে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ভালো জাতের দুধেল গাভীর অভাব, গো-খাদ্যের স্বল্পতা ও উচ্চ মূল্য, বাজারজাতকরণের সমস্যা ও নিয়মিত দুধ পানের অভ্যাস গড়ে না উঠা। এজন্য মানুষের মাঝে দুধের উপকারিতার কথা প্রচার করে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি গো-খাদ্যের দাম কমানোর দাবিও জানান তিনি।

সংবাদ মাধ্যম জানানো হয়, আগামী ১ জুন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৩ উদযাপন করা হবে। এবছরে দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে – ‘পুষ্টি ও জীবিকার উৎস হিসেবে পরিবেশ বান্ধব ডেয়রি’। দিবসটি উপলক্ষে স্কুলের শিশুদের মাঝে দুধ পান করানো, বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উদযাপনে সহযোগিতা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্কভিটা), আকিজ ডেয়রি লিমিটেড, ঢাকা আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, নিউজিল্যান্ড ডেয়রি প্রোডাক্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড, আড়ং ডেয়রি, নেসলে বাংলাদেশ, প্রাণ ডেয়রি এবং ঈগলু আইসক্রিম।

বার্তাবাজার/এম আই