বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, খাদ্যমন্ত্রী চালকলের মালিক আর বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। তাহলে দেশ চলবে কিভাবে। সর্ষের মধ্যেই ভূত। সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে ভূত ছাড়াব কিভাবে।

তিনি বলেন, এটা আমার কথা নয়, এটা আওয়ামী লীগের শিল্পমন্ত্রীর কথা।

মঙ্গলবার বিকালে নাটোর শহরের কানাইখালি পুরাতন বাস টার্মিনালে জাতীয় কৃষক সমিতির দুই দিনব্যাপী সপ্তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দিনাজপুর ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেকবার প্রয়োজনে কৃষক বিদ্রোহ হয়েছে। আবার নতুন সময় আসছে দেশের কৃষকদের কোমর সোজা করে মাজায় গামছা বেঁধে মেরুদণ্ড সোজা করে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে।

মেনন বলেন, আমেরিকার ভিসানীতি কী হলো বা দেশের সংসদে কী হলো তা নিয়ে দেশের কৃষকদের চিন্তা নেই। কৃষক চায় তার উৎপাদিত পাট, আখ, ধান ও সবজির ন্যায্য দাম। কৃষক চায় সার, ডিজেল, কীটনাশক ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে। কৃষক চায় তার প্রতিনিধি সংসদে যাক।

আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। টাকা আর মার্কা দেখে ভোট দিলে হবে না, ভালো মানুষ দেখে যারা কৃষকের কথা চিন্তা করে তাদের ভোট দিতে হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম গোলাপ।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা নূর আহম্মেদ বকুল, নজরুল হক নীলু, আব্দুল মজিদ, নাটোর জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন বাদল, অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, সিংড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।

সম্মেলনের পক্ষ থেকে প্রতি মণ পাটের দাম ছয় হাজার টাকা ও আখের দাম তিনশ টাকা করার পাশাপাশি বন্ধ পাটকল ও চিনিকল আধুনিকায়ন করে চালু করার দাবি জানানো হয়। সব নদ-নদী দখলদারিত্বমুক্ত করে পানি প্রবাহ সৃষ্টি, বড়াল নদের উৎসমুখ চারঘাটের সুইসগেট প্রত্যাহার, দেশের সকল জেলা উপজেলায় হিমাগার স্থাপন, সকল প্রকার জ্বালানি তেল, সার কীটনাশকের দাম কমানো, রেশনিং চালু এবং অসম্প্রাদায়িক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে সাম্রাজ্যবাদী-মৌলবাদী চক্রান্ত রুখে দেয়ার দাবি জানানো হয়।

সম্মেলনে কৃষি আদালত গঠন, কৃষি বীমা চালু ও ২৫ বিঘার নিচে জমির খাজনা মওকুফের দাবি জানানো হয়। সম্মেলন থেকে দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও এই খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করার দাবি জানানো হয়েছে।

বুধবার সারাদিন নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে সারা দেশ থেকে আসা জাতীয় কৃষক সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে সংগঠনটির ৭ম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বার্তাবাজার/এম আই