সিরাজগঞ্জে সদর ও তাড়াশ উপজেলায় ৩০০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রিড ধান চাষে পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে উদ্যেগ গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এই দুইটি উপজেলার কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে পাইলট স্কীমের কার্যক্রম মনিটরিং করছে কৃষি বিভাগ। কার্যক্রম সফল হলে জেলার কৃষি খাত নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একটি নির্দিষ্ট মাঠে একই সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে ফসলের রোপন ও কর্তনের মাধ্যমে সময় ও উৎপাদন খরচ কমানোই হলো সমলয় পদ্ধতি। এছাড়া নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের মেলবন্ধন সৃষ্টি করা আধুনিক কৃষির এক অপরিহার্য উদ্যোগ হবে।

সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়ন রঘুরগাঁতী গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, ডুমুর ব্লক নামে সমলয় পদ্ধতিতে চার হাজার ৫০০ প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ বপন করা হয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে এ চারা ১৫০ বিঘা জমিতে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে রোপণ করা হবে। একই পদ্ধতিতে তাড়াশ উপজেলার আরও ১৫০ বিঘা জমিতে বোরো রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। এ পর্যন্ত বীজ রোপণ করা হয়েছে ১২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমি।

রঘুরগাঁতী গ্রামের সুবিধাভোগী কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আগে কখনও এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ দেখিনি। অনেকটা কৌতুহল বশত হয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার চার বিঘা জমিতে বোরোর চাষাবাদ শুরু করবো। জমি আর সেচের খরচ বাদে সব কিছু নাকি সরকার দিবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বোরোতে লাভবান হলে আগামীতে আরও পরিধি বাড়াবো।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী এসএম শাহীন আলম বলেন, মানুষ বাড়লেও, বাড়ছে না কৃষি জমি। তাই স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদ শুরু করেছে। এতে কৃষকরা বেশ উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বার্তা বাজারকে বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে সরকার প্রতিটি ব্লকের আওতায় ১৫০ বিগা জমিতে বোরো চাষের প্রণোদনা দিয়েছে। প্রণোদনা কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ বাদে ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে সমুদয় ব্যয় বহন করবে সরকার।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, বোরো ফসল আরও অধিক উৎপাদন করার লক্ষ্যে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা বেশি ফলন পাবে। প্রাথমিকভাবে দুটি উপজেলায় ৩০০ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ করা হবে। আশা করছি ভালো ফল পাওয়া যাবে।

বার্তা বাজার/জে আই