ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ছিনতাইকৃত পঁচিশ লক্ষ টাকার ঘটনায় তিন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের থেকে এগারো লক্ষ টাকা এবং ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি সাদা প্রাইভেট কার আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২৮ মে) দুপুরে সাভার মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান।

গ্রেফতার ওই তিন আসামি হলো- মাগুরা জেলার রাঘব দাইড় এলাকার মৃত জয়নুদ্দিনের ছেলে মোঃ শিমুল (৩৬), বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার বাটাজোর এলাকার মৃত কাদের বেপারীর ছেলে মোঃ তাওহিদ ইসলাম (৪৫) এবং পটুয়াখালী জেলার দশমিনা থানার ঠাকুরহাট বাজার এলাকার কালু হাওলাদারের ছেলে মোঃ জসিম উদ্দিন।

আসামিদের সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার।

প্রেস ব্রিফিং থেকে জানা যায়, গত ৭ মে, ২০২৩ তারিখে ইসলামী ব্যাংকের মার্কেটিং ম্যানেজার মোঃ হাবিবুর রহমান ও সিকিউরিটি নাঈম ইসলাম পঁচিশ লক্ষ ষাট হাজার টাকা নিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটিডের হেমায়েতপুর শাখায় জমা দেওয়ার জন্য উলাইলের আল-মাদানী রেস্টুরেন্টের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন। এসময় একটি সাদা রংয়ের অজ্ঞাতনামা নাম্বারের প্রাইভেটকারে এসে তাদের সামনে থামে। তখন কার ড্রাইভার আসামি মোঃ তাওহিদ ইসলাম ও গাড়ির ভিতরে থাকা আসামী মোঃ শিমুল সিকিউরিটি নাঈম ইসলামের কাধ থেকে টাকার ব্যাগ টান দিয়ে প্রাইভেটকার নিয়ে হেমায়েতপুরের দিকে চলে যায়। আসামী মোঃ জসিম উদ্দিন ছিলেন মোবাইলে এই ছিনতাই কাজের তথ্য দাতা। পরে তিন আসামি একত্রিত হয়ে ছিনতাইকৃত টাকা নিজেদের মধ্য ভাগ বন্টন করে নেয়।

এঘটনায় ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মালিক মোঃ ফয়জুল হকের এজাহারের প্রেক্ষিতে সাভার মডেল থানায় মামলা (নং-২৯, তারিখ: ৮ মে, ২০২৩) রুজু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই মোঃ মাহমুদুল হাসান।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম, অপস্ ও ট্র্যাফ্রিক (উত্তর), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (সাভার সার্কেল) এবং সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ এসআই সুদীপ কুমার গোপ ও অন্যান্য অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় উক্ত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (২৭ মে) ৩নং আসামী মোঃ জসিম উদ্দিনকে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ শিমুল ও মোঃ তাওহিদকে গ্রেফতার করা হয় এবং ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত গাড়িটিও আটক করা হয়।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামীগণ উক্ত ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং তাদের নিকট হতে ছিনতাইকৃত সর্বমোট এগারো লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকী টাকা আসামীরা নিজেদের মধ্য ভাগ বন্টন করে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ১নং আসামী মোঃ শিমুল জায়গা-জমি বায়না করে, ২নং আসামি মোঃ তাওহিদ ইসলাম তার মায়ের চিকিৎসার কাজে এবং ৩নং আসামি মোঃ জসিম উদ্দিন তার বাড়ি ঘর নির্মাণ কাজে ছিনতাইকৃত টাকা ব্যয় করে বলে জানায়। আসামীদের নামে ঢাকা মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলায় মামলার তথ্যদি পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসময় ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফি, সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত এসপি শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশ্শিরা হাবিব খান, পিপিএম-সেবা এবং সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা প্রমুখসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাবাজার/এম আই