কুমিল্লায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা শাহাপুর থেকে মাহবুব নামে এক যুবককে আটক করে শনিবার (২৭ মে) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ দেবীদ্বার থানা পুলিশ।

আটক মাহবুবুর রহমান ফরহাদ নামে ১৬ বছরের এক কিশোরকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি মামলার আসামি। এছাড়াও মাহবুব সম্প্রতি মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা মামলারও এহজারনামীয় আসামি।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিন আবেদ। আটক মাহবুবকে শনিবার (২৭ মে) দুপুরে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ওমর ফারুক’র ৪নং আমলী আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মাহবুবুর রহমান (২৩) দেবীদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে। এর আগে একই মামলায় মঙ্গলবার তার অন্যতম সহযোগী আশরাফুল নামে অপহরণ চক্রের আরেক সদস্যকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে নেওয়া হলে মাহবুবের সাথে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের সাথে জড়িত মর্মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। আশরাফুল শাকতলা গ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে, সে বর্তমানে কুমিল্লা জেল হাজতে আছে।

মামলার এজহার ও ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলা এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের সিএনজি চালক জামাল হোসেনের পুত্র মো. ফরহাদ (১৬) কাচিসাইর বাজারে আসার সময় অপহরণ চক্রের মূল হোতা মাহবুব ও সহযোগিরা দুটি বাইকে করে ফরহাদের গতিরোধ করে তাকে মারধর করে মাহবুবের বাইকে করে তাকে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের রামপুর মাদরাসার সংলগ্নে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে আটক রেখে মারধর করে। পরে ফরহাদের ফোন নম্বর থেকে তার বাবার কাছে ফোন করে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য বলে। পরে ফরহাদের বাবা জামাল হোসেন বিকাশের নম্বর চাইলে মাহবুব মাশিকাড়া বাজারের জৈনিক বিকাশ ব্যবসায়ী লাভলু’র এজেন্ট নম্বর দেয়। জামাল হোসেন ওই নম্বরে মুক্তিপণের ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণের পুরো ঘটনা বিকাশ দোকানদার লাভলুকে জানায় এবং যে ব্যক্তি টাকা তোলার জন্য আসবে তাকে আটক করে রাখার জন্য অনুরোধ জানায়। পরে মাহবুবকে টাকা পাঠানোর কথা জানালে সে চক্রের অপর সদস্য আশরাফুলকে লাভলুর দোকানে পাঠায়। পরে আশরাফুল লাভলুর দোকানে টাকা তোলার জন্য গেলে লাভলু আশরাফুলকে আটক করে জামাল হোসেনকে খবর দিলে জামাল হোসেন ৯৯৯ কল করে আশরাফুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ খবর পেয়ে অপহরণের মূলহোতা মাহবুব অপহৃত কিশোর ফরহাদকে মারধর করে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায়।

শনিবার রাতে দেবীদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিন আবেদ বলেন, অপহরণ চক্রের মূল হোতা মাহবুবকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার শাহাপুর থেকে আটক করা হয়েছে। সে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। অপহৃত কিশোর ফরহাদের বাবা জামাল হোসের বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন।

এছাড়াও মাহবুবুর রহমান দেবীদ্বার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী শ্লীলতাহানীর ঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায় অপর একটি মামলার এজহারভুক্ত আসামী। তাকে শনিবার (২৭ মে) দুপুরে কুমিল্লা আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বার্তাবাজার/এম আই