রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতেও। ডলার সংকটের সঙ্গে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে আমদানি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগ অব্যাহত থাকলেও আবারও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। সবশেষ এই প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গত ৮ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মাসের আমদানি বিল ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের ফলে রিজার্ভ কমে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল, যা গত ৭ বছরে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের ২৪ দিনে আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে রিজার্ভ থেকে কমেছে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৯৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এছাড়া চলতি অর্থবছরে জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এলসির বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে ৬২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছর ২০২১-২২ এর চেয়ে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। এই হিসাবে গড়ে এখনো প্রতি মাসে ৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় বাবদ পরিশোধ করা হচ্ছে।
তবে, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত জুলাইয়ে নেওয়া উদ্যোগ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার কমে আসলেও পুরনো ব্যয় পরিশোধ অব্যাহত থাকায় গড়ে প্রতি মাসে এখনো সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে আমদানিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ১০ মাসে নতুন এলসি খোলা হয়েছে ৫৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের এই সময়ের চেয়ে ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ কম। এই হিসেবে গত ১০ মাসে গড়ে প্রতি মাসে ৫ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার নতুন এলসি খোলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বার্তাবাজার/এম আই