আদালতের নির্দেশ অমান্য ও তথ্য গোপন করে কক্সবাজারের টেকনাফে ‘নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ এর মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে তাদেরই দুই সহোদর। আদালতের নির্দেশে বিষয়টি তদন্তে উক্ত প্রতিষ্টান পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

গত এপ্রিলে রবিউল হোসেন গং বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিবাদী করা হয়েছে তাদের অপর সহোদর দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেনকে। যার এম আর মামলা নং-৮১৯/২০২৩ ইং।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ প্রতিষ্টাননের মালিক মোহাম্মদ হোসেন এর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন চার ছেলেদের দিয়ে পালা করে প্রতিষ্টানটি পরিচালনা করতেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রবিউল হোসেন ও রেজাউল হোসেন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। পরে তাদের মা আম্বিয়া খাতুন দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেনকে ২০১৮ সালে আট বছরের জন্য লিখিত রেজিষ্ট্রার্ড চুক্তি মূলে পরিচালনার দায়িত্ব দেন। পরে মা মারাযান।

এদিকে দিদার হোসেন গং দায়িত্ব নেয়ার পরে ‘নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ থেকে আয়ের টাকা দিয়ে ওই জমিতে একটি ‘এলপি গ্যাস’ স্টেশন প্রতিষ্টা করেন। ওই গ্যাস স্টেশনে লোভ পড়ে রবিউল হোসেন গং এর।

আদালতের আদেশের কপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গেলো বছর ১১ আগষ্ট দিদার হোসেন গং কক্সবাজার সহকারী জজ আদালতে রবিউল হোসেন গং এর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। (যার মামলা নং- ১৮৩/২০২২ ইং)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর দিদার হোসেন গং এর চুক্তি পত্র বৈধ ঘোষনা করে। মামলা চূড়ান্ত নিস্পত্তি পর্যন্ত দিদার হোসেন গং কে রবিউল হোসেন গংদের নালিশী তফসিলের জমি হতে অপসারনের তৎপরতা বন্ধসহ উক্ত জমি অন্যত্র বন্ধক দেয়া হতে রবিউল হোসেন গংকে বিরত থাকার অস্থায়ী নির্দেশ প্রদান করে।

অপরদিকে, রবিউল হোসেন গং এর বিরুদ্ধে দিদার হোসেনের দায়ের করা অপর একটি মামলায় চলতি বছর ১১ জানুয়ারী কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালত কর্তৃক চুক্তিমূলে দিদার হোসেন গং এর প্রতিষ্টানের মালিকানা বৈধ ঘোষনা করে। একই সাথে চুক্তি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বরিউল হোসেন গংকে উক্ত প্রতিষ্টানে প্রবেশ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করে চূড়ান্ত ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে।

দিদার হোসেন জানান, পৃথক দুটি আদালতের রায় এবং নির্দেশ এর তথ্য গোপন করে গত এপ্রিল মাসে রবিউল হোসেন গং ফের আমাদের বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করে। যেটা অনেকটা আদালত অবমাননা এবং আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল। আদালতের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্তে এসেছিলেন। তাকে আদালতের আদেশ এবং চুক্তিপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র সর্বরাহ করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমরা ফের আদালতের ধারস্থ হবো।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরফানুল হক জানান, আদালতের নির্দেশে ‘নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ এ গিয়ে বিবাদীদের সাথে বসে বিষয়টি নিয়ে আইনী ভাবে আলাপ হয়েছে। তারা তাদের কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই বাচাই শেষে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।

এই বিষয়ে মামলার বাদী রবিউলের কাছে মুটফোনে জানতে চাওয়া হলে, তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখেদেন। তাই তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

বার্তা বাজার/জে আই