সাখাওয়াত হোসেন নামের এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী নিজে কারিগর রেখে জাল নোট তৈরি করে আসছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। সাভার অন্ধ মার্কেট এলাকায় বুধবার (২৪ মে) লিচু কিনতে গেলে বাধে বিপত্তি। লিচুওয়ালার সন্দেহ হলে বিষয়টি জানায় সাভার মডেল থানায়। আসে পুলিশ। পরে ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফি, সাভার সার্কেলের এসপি শহিদুল ইসলাম এবং সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে চলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। পুলিশ সন্ধান পায় সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের সাদাপুর বসির মার্কেটের বেঙ্গল গার্মেন্টস এলাকায় জালনোট তৈরির ওই কারখানার।

বুধবার (২৪ মে) দুপুরে ঢাকার জেলার পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে সাখাওয়াত হোসেন নামের এক ব্যক্তি জালনোট তৈরি করে আসছিলেন। আজ (বুধবার) বনগাঁও ইউনিয়নে তার গার্মেন্টসে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির একজন কারিগর ও এক সহযোগী সহ মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। এসময় তাদের নিকট থেকে ৫০ লক্ষ ১৭ হাজার টাকার জাল নোট, এক বোতল বিদেশী মদ, বেশকিছু ইয়াবা ট্যাবলেট এবং জাল টাকা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করেছি’।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে টার্গেট করে বেশ কিছুদিন ধরে এরা জাল নোট তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছিলো। যদিও আমার ধারণা দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই কার্যক্রম চালাচ্ছে। আমরা এসব জাল টাকা বাজারে ছাড়ার আগেই তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।

পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরির যেসকল চক্র সক্রিয় আছে, ঢাকা জেলা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের আজকের এই সফলতা। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, এই চক্রের সাথে ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। এদের ভিতর কেউ কেউর চাকরি চলে গেছে।। তাদের সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। আমরা ধারণা করছি, এই চক্রটি শুধু বাংলাদেশী কারেন্সি না, বাইরের কারেন্সির জাল নোট তৈরির প্রচেষ্টাও তাদের ছিলো। আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে এই চক্রটি সারা দেশে বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এটাও আমরা খতিয়ে দেখবো। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে এবং এখানে জড়িত সকলকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার সকলকে নোট গ্রহনের সময় সজাগ থাকার আহবান জানান। বিশেষ করে ব্যাংক থেকে নোট লেনদেনের সময়ও সতর্ক থাকার কথা বলেন তিনি। কারণ জাল নোট তৈরির চক্রের সাথে বেশ কিছু ব্যাংক কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়টিও সামনে এসেছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফি, সাভার সার্কেলের এসপি শহিদুল ইসলাম এবং সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা প্রমুখসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাবাজার/এম আই