১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদারের কবল থেকে মুক্ত হয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল।দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে এ উপজেলায় কাদেরিয়া বাহিনী বিশেষ অবদান রাখে এই এলাকা শত্রুমুক্ত করতে। এই বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা যমুনা নদীতে পাকিস্থানি যুদ্ধ জাহাজ ধবংস করেন।
তাঁরা পাকিস্তানি বাহিনীর গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কব্জা করে মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হবার পর
ঘাটাইলের সব মুক্তিযোদ্ধা এ বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মাকড়াই যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর হাতে গুলি লাগলে তিনি মারাত্মক আহত হন। ৭ ডিসেম্বর ভূঞাপুর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ডিসেম্বর রাত্রেই ঘাটাইলের প্রত্যেক পাকবাহিনীর অবস্থানে একযোগে আক্রমণ করা হবে খোদ কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে।
এই মর্মে প্রত্যেক কম্পানি ও কম্পানি কমান্ডারদের আক্রমণস্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে ৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ৩০টি কম্পানিতে বিভক্ত করে পাঁচটি মূল দলে ভাগ করে আক্রমণের স্থান নির্ধারণ করা হয়। ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টায় আরো একটি কম্পানি রতনপুর অবস্থান নেয়। গোলাপের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে
বানিয়াপাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে তেলেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয় কম্পানিটি।
৯ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকীর নির্দেশ অনুযায়ী কালিদাসপাড়া, গুণগ্রাম, ঘাটাইল সদর ও বানিয়া পাড়া সেতু একযোগে আক্রমণ করা হবে। সে পকিল্পনা মোতাবেক ভোর ৪টা
থেকে ৬টা পর্যন্ত চতুর্দিক থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাটাইল থানা আক্রমণ করে মুক্তি বাহিনী। পরে মেজর হাবিব ভোরে বানিয়াপাড়া সেতু, মেজর মোস্তফা কালিদাসপাড়া সেতু দখল করে ঘাটাইল থানার দিকে অগ্রসর হন। কাদের সিদ্দিকী নিজেই পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। এ যুদ্ধে ৫০ জন পাকহানাদার নিহত ও ১৫০ জন বন্দি হয়। এই দিন ঘাটাইল পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে ঘাটাইল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বার্তাবাজার/এম আই