একতরফা, পাতানো নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার করা হবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং দালালরা কেউ ছাড় পাবেন না। জনগণের আদালত গঠিত হচ্ছে এবং এই আদালতে তাদের প্রত্যেকটি অপকর্মের জবাব দিতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রিজভী বলেন, শাসকগোষ্ঠী দেশ-জাতি ও আন্তর্জাতিক মহলের মতামতকে উপেক্ষা করে প্রহসনের নির্বাচন করার জেদ অব্যাহত রেখেছে। অথচ জনরোষ এবং আন্তর্জাতিক মহল সবদিক থেকে আজকে এই সরকারের বিষয়ে যে ওয়াকিবহাল এবং মানুষের জনরোষ যে কত তীব্রতর হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কত বিরূপ এই পাতানো নির্বাচনের জন্য। তারা মনে করছেন, আমরা সবকিছু মিলিয়েই বৈতরণী পার হয়ে যাব। অথচ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী হবে, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে.. এর কোনো খেলায় তারা রাখতে চান না, রাখছেন না।
গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির ওপরে স্যাংশন আসে কত মানুষ যে বেকার হবে, কত নারী যে বেকার হবে, কী যে পরিণতি হবে শেখ হাসিনা সেটা ভাবছেন না। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের গার্মেন্টস শিল্পকে একটা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন। উনি দেশ চান না, দেশের অর্থনীতি মজবুত হোক সেটা তিনি চান না। তার দরকার হচ্ছে অমল-ধবল। আর সেই কারণেই খেল-তামাশার নির্বাচন করার জন্য তিনি মরিয়া। আর এটা করতে গিয়ে এদেশকে কী পরিমাণ খেসারত দিতে হচ্ছে এবং হবে তার কোনো ঠিকানা নেই।
গত ১৫ বছর ধরে সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নিরুদ্দেশ করে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৬৫টি মামলায় ২৯ হাজার ৭৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর হামলায় এক হাজার ৫২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ২৮৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১৫টি মামলায় এক হাজার ৩৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলায় ৬৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। জনগণ যার পক্ষে থাকে, জনশক্তি যার সাথে থাকে তারা কোনোদিন পরাজিত হয় না। হয়তো সাময়িকভাবে আমরা উৎপীড়িত, আমরা নির্যাতিত, আমরা নিপীড়িত। কিন্তু নিপীড়ন নির্যাতনের সমস্ত আঘাত একদিন প্রতিঘাত হিসেবে এই অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবে, প্রত্যাঘাত করবে এবং গণতন্ত্রের বিজয় হবে।
এ সময় অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন চলছে। ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হবে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে, চলবে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এই অবরোধ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। সব জনগণ এই অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়েছে। আমরা জনগণের সমর্থনে বিশ্বাস করি, আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। আমাদের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে জনগণ। আমরা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করি না, একে বকা, ওকে বকা এগুলো করি না। আমরা জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করে আমরা আমাদের দাবিগুলোর জন্য এই আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। আমি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সকলকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বার্তাবাজার/এম আই