বিএনপির নাশকতায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। নাশকতাকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে বিএনপির নাশকতা দমন করবে।
বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় আসতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতেই হবে। আর ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে তারা কোনো নাশকতা করবেন না আশা করি। তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনের উৎসব শুরু হয়ে গেছে। সেখানে নাশকতা কেউ চায় না। যারা এখন নাশকতা করছে, এটা তাদের অভ্যাস।
বিনা পরোয়ানায় বা বিনা দোষে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এ বছরের ২৩ জুলাই থেকে দৈনিক গড়ে এক হাজার ৯৫৬ জন আটক হয়েছে। প্রতিদিন জামিনে ছাড়া পাচ্ছেন একই সংখ্যক।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ওইদিনের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়। সেদিনের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ঢুকে গিয়েছিল। যা আপনাদের ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে। সেগুলো তো এক-দুজন করেনি, কয়েক হাজার লোক সেখানে ছিল। তারা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে গিয়েছিল। তারা পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে। হামলায় সাংবাদিকরা পুলিশ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানেও তাদের পেটানো হয়েছে।
গত এক মাসে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী আটক হয়েছেন তাদের অনেকেই কারাগারে মারা গেছেন। এ ছাড়া মুখোশপরা বাহিনীও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা করছে। এ অবস্থায় মানবাধিকার পরিস্থিতি আপনি কিভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনি কি ভুলে গেছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে তারা (বিএনপি) হত্যা করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে ২৫ হাজার ভুয়া মামলা দায়ের করেছিল। যেগুলোর কোনো অস্তিত্ব ছিল না।
তিনি বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে। নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে নিবন্ধিত ২৯টি দল, বেশিরভাগ দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচনের আমেজ, একটা উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজেই এখানে কেউ নাশকতা করবে, এটা কেউ চায় না।
বিএনপির সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা সুনিশ্চিত নির্বাচনে পরাজয় জেনেই ভিন্ন পন্থায় নির্বাচনকে প্রতিহত করার জন্য একটা অগণতান্ত্রিক উপায় শুরু করেছে। আমরা মনে করি, আমাদের নির্বাচনের বাইরে আর কোনো কিছু নেই। যার মাধ্যমে তারা (বিএনপি) ক্ষমতা বদলাতে পারে। ক্ষমতায় আসতে হলে তাদের নির্বাচনে আসতে হবে। এটিই হলো সহজ পন্থা।
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পুরোপুরি অবশ্যই বন্ধ হবে। এর আগে ৯০ দিন করে বন্ধ করেছে। এবারও তাদের নেতাদের বোধোদয় হবে এবং বন্ধ করে দেবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কেউ লাইসেন্স করা অস্ত্রের অপব্যবহার করলে জেলা প্রশাসক তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বসবাসরত এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বার্তাবাজার/এম আই