ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নতুন করে সংঘাতে আবারও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) অজ্ঞাত দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মাঝে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে ১৮০ জনের প্রাণহানির ঘটনার সাত মাস পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা বলেছেন, উদ্ধারকৃত মরদেহের পাশে কোনো ধরনের অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তাদের হত্যার পর অস্ত্র লুট করে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের কিংবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া গোষ্ঠী দু’টির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
চাকরিতে কোটা এবং জমির অধিকার নিয়ে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি ও সংখ্যালঘু কুকি-জো সম্প্রদায়ের মাঝে গত ৩ মে জাতিগত সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এরপর থেকে কয়েক মাস ধরে রাজ্যজুড়ে দুই সম্প্রদায়ের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। মণিপুরের মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের মাঝে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮০ জনের প্রাণহানি এবং ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ৩২ লাখ বাসিন্দার এই রাজ্যে বিশৃঙ্খলার শুরু হয়েছিলো মে মাসে।
রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কুকি গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে সেখানে দফায় দফায় আন্দোলন হয়। মণিপুর রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৪ শতাংশ মেইতি সম্প্রদায়ের। তারপরও ওই রাজ্যের মোট ভূখণ্ডের মাত্র ১০ শতাংশের মালিকানা এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের হাতে রয়েছে। ভারতের এই রাজ্যে তফসিলি উপজাতিদের বাইরে পাহাড়ী এলাকায় অন্য কারও জমি কেনার অনুমতি নেই।
কয়েক মাস আগে ভারতের হাইকোর্ট মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিদের তালিকার অন্তর্ভূক্ত করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তফসিলি উপজাতিদের তালিকায় ঠাঁই পেলে রাজ্যে জমি কেনার অনুমতি পাবেন। সূত্র: রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বার্তা বাজার/জে আই