আক্তার পেশায় একজন লাটাহাম্বার চালক। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বেশ ভালই চলছিল। হঠাৎ স্ত্রীর ইচ্ছায় বিষয়খালী ‘রান ঋণদান সমবায় সমিতি’ থেকে দুই কিস্তিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋন গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে ঋণটি স্ত্রী আছিয়ার নামে গ্রহণ করা হয়। পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণের পর মাজা সোজা করে দাড়াতে পারেনি আছিয়া ও তার স্বামী আক্তার।

৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শোধ করেন তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। তারপরও সুদখোর রফি ক্ষ্যান্ত হয়নি। লাঠিয়াল বাহিনী পাঠিয়ে ধরে আনে আক্তারকে। বিষয়খালী ‘রান ঋণদান সমবায় সমিতি’র অফিসে এনে বেদম মারপিট করে আক্তারকে। মারধর খেয়ে বাড়ি ফিরে যায় আক্তার। ক্ষোভে অপমানে রাতে বাড়ি থেকে নলডাঙ্গা বাজারে গিয়ে বিষ কিনে পান করেন। এরপর তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মৃত্যুবরণ করেন।

আক্তার সদর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান মতির ছেলে। বেশ কিছুদিন আগে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রশাসন।

জানা গেছে, সদরের কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফি ঝিনাইদহের বিষয়খালি বাজারে রান ক্ষুদ্র ঋণদান ও সমবায় সমিতি অবধৈভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের ফাঁকা চেক নিয়ে ঋণের মেয়াদ শেষ হবার আগেই গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করেছেন। এর আগে প্রায় শতাধিক ভুক্তভুগী পরিবার লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে জেলা সমবায় অফিস গনশুনানী ও তদন্তের আয়োজন করে। শুনানিতে ভুক্তভুগী পরিবার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়রানীর কথা তুলে ধরে লিখিত জবান বন্দী দেন। শুনানীর দিন রফির ভাড়াটে লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে উপস্থিত অভিযোগকারীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকলে খবর পেয়ে ডিবির একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। কালিগঞ্জ উপজেলার চাপালিয়া গ্রামের স্বপন ঘোষ সুদের টাকা দিতে না পারায় পৈতৃক সম্পাত্তি দখল করে নিয়েছেন সুদখোর রফি।

ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের বাসীন্দা স্বপ্না খাতুন স্বামীর ব্যাবসার জন্য রফির কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋন গ্রহন করে এখন মামলায় ঝুলছেন। এ ভাবে শত শত মানুষ সুদখোর রফির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসার মোঃ জাফর ইকবাল জানান, রান সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। খুব দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হবে।

তিনি বলেন, ঋণ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে কোন রকম অন্যায় অবিচার করার সত্যতা পাওয়া গেলে তার সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করা হতে পারে।

বার্তাবাজার/এম আই