রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাট করে ‘দলছুটদের’ দিয়ে সরকার নতুন দল বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দলের মধ্যে নানাভাবে সুবিধাবাদী ও উচ্ছিষ্টভোগীরা ঢুকে পড়েছে। এরশাদের শাসনে এসব লোককে নিয়ে দল গঠন করেছে, সরকার গঠন করেছে। বর্তমান সরকার এখন ওই কায়দা অনুসরণ করছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল কখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ভাগিয়ে নেয় না। এ কাজ করে গ্রাম্য মোড়ল, টাউট, বাজে লোকেরা। সেই কাজ বর্তমান সরকার এখন করছে।
রিজভী আরও বলেন, বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো থেকে লোক ভাগানোর জন্য তিনি (শেখ হাসিনা) তার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তারা সেই কাজটি করছেন। একেকজনকে নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে, নতুন দলের একেকটা অদ্ভুত নাম দিয়ে তাদের নিয়ে যাচ্ছে। নমিনেশনে তাদের জেতানো হবে বলে অথবা টাকা-পয়সার লোভ দেখাচ্ছে। একদিকে চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনগণকে দমন করার নিষ্ঠুর পদক্ষেপ, অন্যদিকে চলছে রাষ্ট্রীয় টাকা লোপাট করে দলছুটদের নিয়ে দল বানানোর কারসাজি।
সারা দেশে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র কেন? এমন প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, আমরা জেনেছি র্যাবের জন্য ৪২৮টি কেন্দ্র বানানো হচ্ছে সারা দেশে। এদের কাজ কি? সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি গণতান্ত্রিক দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এভাবে নিয়োগ করা হয়, তাদের দিয়ে সারা দেশে একেকটি কেন্দ্র বানানো হয়, সেখান থেকে তারা কী করবে? তাদের কাজ জনগণের যাতে কোনোভাবে বিস্ফোরণ না ঘটে। সরকার সামনে একতরফা নির্বাচনের যে মাস্টার প্ল্যান করেছে সেটা বাস্তবায়ন করতে নেতাকর্মীদের বেপরোয়াভাবে গ্রেপ্তার করছে। সেই কারণেই র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র করা হয়েছে।
শুক্রবার র্যাব কর্তৃক বিএনপির কেন্দ্রীয় সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পেশাজীবীদের অনুষ্ঠান শেষে ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করছে র্যাব। তাকে গ্রেপ্তারের দৃশ্যটি বিস্ময়কর। বাংলাদেশে আ.লীগ আরও কিছুদিন টিকে থাকে কোনো ভদ্রলোক বাংলাদেশে বাস করতে পারবে না। একজন সিনিয়র চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের পর দুই র্যাব সদস্য দুই পাশে। আমার প্রশ্ন হলো তিনি একজন সুচিকিৎসক, তাকে গ্রেপ্তারের পর সম্মানের সাথে র্যাব কার্যালয়ে বসিয়ে রাখতে পারতেন। তার ছবি তুলছেন দুধর্ষ কোনো সন্ত্রাসী না হয় কোনো দাগী চোর-ডাকাত।
সারা দেশে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট গ্রেপ্তার ২৯০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় মামলা হয়েছে ১০টি, আসামি করা হয়েছে ১২৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। এ সময় আহত হয়েছে ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মী। মৃত্যু হয়েছে একজনের।
এ ছাড়াও ১৫ নভেম্বর তপশিল ঘোষণার পর থেকে মোট গ্রেপ্তার ৩৮৭৫ জনের অধিক নেতাকর্মী, মামলা হয়েছে ১২৫টি, এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৪৬৯০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। আহত ৫৩৭ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
বার্তাবাজার/এম আই