মাদারীপুরের রাজৈরে একটি প্রাইমারী স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর প্রশ্নপত্র দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর বিজ্ঞান পরিক্ষা গ্রহণ করেছেন একই বিষয়ের শিক্ষক কাজী শাহাজুল।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বৌলগ্রামের ৪১ নং মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর মূল্যায়ন পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি একই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপা বিশ্বাস।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বৌলগ্রামের ৪১ নং মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন (ফাইনাল) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণী এবং দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের মধ্যে বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। সকালে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা পরিক্ষা দিতে আসলে তাদের পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র দেয় শিক্ষক কাজী শাহাজুল। এরপর পরীক্ষা চলে দীর্ঘ ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। পরে বিকেলে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসলে প্রশ্নপত্র উলাটপালাট হওয়ার ঘটনা জানাজানি হয়। একপর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশ্নপত্র ফিরিয়ে এনে পঞ্চম শ্রেণীর পরীক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষকরা। পরবর্তীতে এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন অভিভাবকরা।
ভুক্তভোগী তৃতীয় শ্রেণীর পরীক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের যে প্রশ্ন দিছে তাতে কোন কিছুই কমন পড়ে নাই। তাই আমাদের পরিক্ষা ভালো হয় নাই। আমরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাদের বাড়ি গিয়ে প্রশ্নপত্র ফেরত এনেছেন রবিউল ভাই (স্কুলের দপ্তরি)।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কাজী শাহাজুল বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার হাতে যেভাবে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন, আমি সেইভাবে এনেই পরিক্ষার্থীদের দিয়েছি। কিন্তু প্রশ্নপত্র দেখি নাই। আমি একাই পরিক্ষা হলে দায়িত্বে ছিলাম।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক টিপু সুলতান বলেন, বিজ্ঞান পরিক্ষার দিন আমার খালা মারা যাওয়ায় সহকারী শিক্ষকদের কাছে প্রশ্নপত্র দিয়ে সেখানে চলে গেছিলাম। তৃতীয় শ্রেণীর প্রশ্নের জায়গায় পঞ্চম শ্রেণীর প্রশ্নপত্র দেওয়ায় আমি দুঃখীত। একই জায়গায় দুটি শ্রেণীর প্রশ্নপত্র থাকায় আমি বিষয়টি খেয়াল করিনি।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপা বিশ্বাস বলেন, সরজমিনে তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আমি আমার উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে এ প্রতিবেদনটি সাবমিট করবো। পরবর্তীতে তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন।
বার্তাবাজার/এম আই