আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, এটি (প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি) আবু সাইদ চাঁদের ব্যক্তিগত বিষয় নয়। বিএনপির আর দশটা মানুষ যেটা ভাবে- ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরা যেটা ভাবে, সেটা তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তিনি (চাঁদ) কীভাবে কী বলতে হয় সেটা বোঝের না। কিন্তু আমরা এটাকে সহজভাবে নেইনি। ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে। আরও মামলা হবে তার বিরুদ্ধে। রাজপথেও তাদের আমরা এইভাবেই মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ।

সোমবার (২২ মে) দুপুরে রাজশাহী নির্বাচন অফিসে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আবু সাইদ চাঁদ বিএনপির জেলা শাখার আহ্বায়ক। তিনি পড়াশোনা করেন না। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে পুনরায় হত্যার ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলেছেন। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিষয়টি শক্তভাবে দেখছি। আজ সারাদেশের মতো রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল ও জনসভা হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে আজকে মনোনয়নপত্র দাখিল করলাম। আমি জানি নগরবাসীর আরও কিছু আশা-আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ আছে। সুযোগ পেলে আগামী ৫ বছরে সেগুলো পূরণ করতে চাই। রাজশাহীতে শিল্পায়নের অবস্থা ভালো না ও তেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। সেখানে কীভাবে শিল্পায়ন করা যায়, কর্মসংস্থান বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকবো। আমার নির্বাচনী ইশতেহারে ১ নম্বরে থাকবে কর্মসংস্থানের বিষয়টি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা নিয়ে আমি রাজশাহীকে কর্মমুখর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

লিটন বলেন, নির্বাচনে জয়যুক্ত হতে পারলে যে কাজগুলো আমার বাকি আছে সেগুলো করবো। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করা। এটি মেয়র বা সিটি করপোরেশনের কাজ নয়। তবুও এটি আমি নিজের দায়িত্ব হিসেবে মনে করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু সরকারে আছেন, তিনি অবশ্যই সহযোগিতা করবেন। রাজশাহীতে শিল্পায়ন হয়নি। বাণিজ্য নেই বললেই চলে। সেই ক্ষেত্রগুলোকে আমি বিকশিত করতে চাই। বিসিক-২, একটি চামড়া শিল্প এলাকা। এগুলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আলোর মুখ দেখবে। সেখানে অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি নগরের সীমা বৃদ্ধি করতে চাই। নগরের সীমা ৯৬ বর্গ কিলোমিটার। এটি বর্তমান যুগে অনেক কম। রংপুর-গাজীপুর প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ বর্গ কিলোমিটার। আমি সাড়ে ৩০০ বর্গ কিলোমিটার প্লাস শহরে উন্নীত করতে চাই। সেটি পুঠিয়ার বেলপুকুর থেকে পবার বিমানবন্দর দিয়ে দামকুড়ার পাশ দিয়ে একবারে হরিপুর পর্যন্ত। এই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নগরায়ন করা দরকার। এখানকার মানুষদের নগরীর সুবিধা দেওয়া দরকার।

এ সময় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি নওশের আলী, যুগ্ম-সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, শফিকুর রহমান বাদশা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে গতকাল রোববার (২১ মে) দুপুরে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই রাসিক নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রায় শতকোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। ২১ মে রাসিকের রাজস্ব খাতের তহবিলে প্রায় ৪০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রেখে পদত্যাগ করেন তিনি। শেষ কর্মদিবস শেষে রাত ৯টায় নগর ভবনে থেকে বেরিয়ে যান। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রথমবার মেয়র ছিলেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

বার্তা বাজার/জে আই