গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে সাজানো-পাতানো নির্বাচন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একতরফা তপশিল ঘোষণা করেছে। একতরফা নির্বাচন হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে তপশিল প্রত্যাখ্যান করে অবরোধের সমর্থনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরানা পল্টন সংলগ্ন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল বের করে গণঅধিকার পরিষদ। নুরের নেতৃত্বে মিছিলটি পল্টন মোড়, নাইটিংগেল মোড় হয়ে বিএনপির নয়াপল্টনস্থ পার্টি অফিসের সামনে দিয়ে ঘুরে ফের নাইটিংগেল মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মিছিল-পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে সাজানো পাতানো নির্বাচন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একতরফা তপশিল ঘোষণা করেছে। দেশের রাজনৈতিক মহল, সচেতন নাগরিকরা, সাংবাদিক, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো বারবার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলেছে। কিন্তু সরকার কারও কথা কর্ণপাত না করে একতরফা তপশিল ঘোষণা করে দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তপশিলের প্রতিবাদে গতকাল (বুধবার) বাম গণতান্ত্রিক জোট ফেনীতে মিছিল করলে সেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা করে। সারা দেশে সরকার তাদের নিজেদের লোক দিয়ে বাসে অগ্নিসংযোগ করাচ্ছে, মানুষ পুড়িয়ে মারছে আর বিরোধীদের উপর এর দায় চাপাচ্ছে।’

নুর বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। যারা শেখ হাসিনার অধীনে একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, জনগণ তাদের চিনে রাখবে, তারা বেঈমান হিসেবে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। ইতোমধ্যে দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে, জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে, সামনে হয়তো আরও বাড়বে। আমাদের বন্ধু বিদেশি রাষ্ট্রগুলো একতরফা নির্বাচন নিয়ে বারবার সতর্ক করছে। তপশিলের প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গেছে। এই সরকারকে কোনোভাবেই আরেকটি পাতানো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। তারই প্রতিবাদে আগামী ১৯ ও ২০ নভেম্বর গণঅধিকার পরিষদ ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ হামলা-মামলা করে বিরোধী দলের সাথে কোনো সমঝোতা না করে সংঘাত ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। তারা আবারও জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে ’১৪ ও ’১৮ মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু জনগণ আর মেনে নিবে না, জনগণ রাজপথে নেমে গিয়েছে, যতক্ষণ না এই সংগ্রাম সফল হবে, গণঅধিকার পরিষদের লড়াই চলবে।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আব্দুজ জাহের, আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, আরিফ তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, রবিউল হাসান, আনিসুর রহমান মুন্না, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ হোসেন, সহনারীবিষয়ক সম্পাদক মীর দিলরুবা সুলতানা, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, যুব পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনজাজুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীবসহ নেতাকর্মীরা।

বার্তাবাজার/এম আই